পুলিশ ফাঁড়িতে যুবকের মৃত্যুর মামলা তদন্তে পিবিআই

রায়হান আহমদ
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে পুলিশি হেফাজতে মো. রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।

গত শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতন করার সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকাল বেলা ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্ট ঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায়। কিন্তু গণপিটুনিস্থল হিসেবে যে স্থানটির কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরায় এ রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

পুলিশ জানায়, গত রোববার রাতে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত্বাবধানে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় সোমবার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়েছে।

নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে চাকরি করতেন রায়হান। সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়ার নিহারিপাড়ায় স্ত্রী, ছয় মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান, মা-চাচাকে নিয়ে বসবাস করতেন। পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা পুলিশের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় মামলাটি নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি ছিল রায়হানের মা সালমা বেগমসহ এলাকাবাসীর।

আরও পড়ুন