পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া আরেকটা বুমেরাং হবে: মির্জা ফখরুল

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে
ছবি: প্রথম আলো

করোনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া আরেকটা বুমেরাং হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি অভিযোগ করেন, এতে সাধারণ মানুষের হয়রানি আরও বাড়বে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণেও পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, যা আরেকটা বুমেরাং হবে। পুলিশ কী করবে, আমরা তা জানি। আপনারা তা জানেন, সবাই তা জানে। মাঝখান থেকে যেটা সেটা হচ্ছে সাধারণ মানুষের হয়রানি আরও বাড়বে।’

‘সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য দুর্নীতি’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার করোনা ব্যবস্থাপনায় প্রমাণ করে দিয়েছে, যে তারা ব্যর্থ সরকার। তাদের কোনো যোগ্যতা নেই। সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটের জন্যই জনগণকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

করোনার এই পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রথমত সরকারের উদসীনতা, দ্বিতীয়ত অজ্ঞানতা আর তৃতীয়ত সরকার সবকিছুতেই দুর্নীতির চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রেও তারা দুর্নীতির ক্ষেত্র কীভাবে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে সফল হলো। সরকার কখনোই করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিকের কাছাকাছি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

চলমান ‘লকডাউনের’ সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দিল। কিন্তু মানুষ যেভাবে পেরেছে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। আমাদের প্রশ্ন ছিল, আগে থেকে এটার পরিকল্পনা করলেন না কেন? তখন যদি গণপরিবহন ছেড়ে দিত, তাহলে মানুষ সহজে বাড়ি যেতে পারত। সরকার আবার ঈদের ছুটি দিয়েছে তিন দিন। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ আবার কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে। এতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। যাদের নিজস্ব গাড়ি আছে, তাদের কিন্তু সমস্যা হয়নি। এখানে সরকারের চরম ব্যর্থতা।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মানুষ খেতে পায় না, অথচ তাঁকে বলছেন আপনি ঘরের ভেতর বসে থাকুন। পৃথিবীর সব দেশেই দিন আনে দিন খায় মানুষদের, যারা ছোট চাকরি করে তাদের সরকারের তরফ থেকে অনুদান পাঠানো হয়েছে। বিএনপিও বলেছিল অসহায়দের তিন মাসের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হোক। দেশে দুই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। আর ইনফরমাল সেক্টরে কাজ করে প্রায় ছয় কোটি মানুষ। এই ছয় কোটি মানুষকে কিন্তু প্রণোদনার আওতায় আনা হয়নি। প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে গার্মেন্টসের মালিক, শিল্পকারখানার মালিককে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ প্রস্তাবের দিকে তারা (সরকার) কোনো চিন্তাই করেনি।’

মতবিনিময়কালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি আল মামুন আলম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।