পুলিশের বাধায় যুবদলের সভা পণ্ড, কেন্দ্রীয় নেতাসহ আহত ২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় পুলিশের বাধায় উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক ও কর্মিসভা পণ্ড হয়েছে। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবদলের নেতা-কর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার আলীয়াবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রাত আটটার দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন নবীনগরে যুবদলের শান্তিপূর্ণ কর্মিসভায় পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা যুবদল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় যুবদল সাংগঠনিক ও কর্মিসভার উদ্যোগ নেয়। পাঁচ-ছয় দিন আগে উপজেলা যুবদল এর জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অনুমতি চায়। শুক্রবার বিকেলে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন একটি দল বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক-১ আশরাফ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আরেকটি দল নবীনগর মহিলা কলেজে এই সভা দুটি করতে চেয়েছিল।

বিকেল চারটার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে যুবদলের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। আর যুবদলের কর্মীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।

শুক্রবার দিনভর উপজেলা যুবদল চেষ্টা করেও প্রশাসনের কাছ থেকে সভার অনুমতি পায়নি। পরে বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবদলের নেতা-কর্মীরা উপজেলার পৌর এলাকার আলীয়াদ গ্রামের সাবেক কাউন্সিলর প্রয়াত মোশারফ হোসনের বাড়িতে যান। সেখানে একটি কক্ষের মধ্যে বসে তাঁরা আলোচনা শুরু করেন।

বিকেল চারটার দিকে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে যায়। এ সময় তারা লাঠিপেটা করে যুবদলের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। আর যুবদলের কর্মীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।

পুলিশের হামলায় কুমিল্লা যুবদলের সাংগঠনিক দলের নেতা ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা যুবদলের সভাপতি আশিকুর রহমান ওয়াসিম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আলী আশরাফ, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন।

জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা বলেন, উপজেলা যুবদলের দুটি দল দুই জায়গায় সভা করতে চেয়েছিল। অনুমতি না পাওয়ায় দুই দলকে একত্রে নিয়ে আলীয়াবাদ গ্রামের এক বাড়িতে তাঁরা আলোচনায় বসেন। সেখানে পুলিশ হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে। পুলিশের মারধরে জাকির হোসেনের ডান হাত ভেঙে গেছে। ইয়াছিন মাহমুদের শরীরে পুলিশের রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমীন বলেন, তাঁদের সভা করার কোনো অনুমতি ছিল না। এরপরও করোনাকালে যুবদলের নেতারা একটি বাড়িতে সভা করায় পুলিশ বাধা দিয়েছে। তখন যুবদলের কর্মীদের ইট–পাটকেলে পুলিশের গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন জানান, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।