পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্বল ধারায় মামলা নথিভুক্তের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে
ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় পুলিশ অপেক্ষাকৃত দুর্বল ধারায় মামলা নথিভুক্ত করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি (উপমহাপরিদর্শক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদের কাছে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এমন অভিযোগ করেছে শাল্লা সোচ্চার নাগরিক ফোরাম সিলেট।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, গত ১৮ মার্চ নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার (৬৫) সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় মামলা করতে এজাহার দাখিল করেন। মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৭৯, ৩৮০, ৪২৭, ২৯৫, ৫০৬, ৩৪ ধারায় পুলিশ নথিভুক্ত করেছে। এটি ঘটনার বিষয় ও গুরুত্ব বিবেচনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পরিপন্থী। অপেক্ষাকৃত দুর্বল ধারায় মামলা নথিভুক্ত করার কারণে জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েও আসামিদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, মামলাটি আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২-এর অধীনে লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি অভিযোগপত্র দিয়ে ন্যায়বিচারের পথ প্রসারিত করা উচিত।

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় আইনজীবী সুব্রত দাশ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন চক্রবর্তী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সমর দাশ এবং সদস্য বিশ্বজিৎ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপিতে কষ্টিপাথরের দেবমূর্তিসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, হামলা প্রতিরোধে প্রশাসনের ব্যর্থতার বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবিও জানানো হয়।

সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শাল্লার ঘটনায় অনেক আসামি ধরা পড়েছে, অনেক আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। স্মারকলিপিটি পুলিশ সুপারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এটির আলোকে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। অপরাধীদের পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ঝুমন দাশের (২৮) বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগ এনে গত ১৭ মার্চ আশপাশের গ্রামের কয়েক শ মানুষ নোয়াগাঁও গ্রামে গিয়ে হামলা চালায়। এর আগে ১৫ মার্চ দিরাই উপজেলায় আয়োজিত এক সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দেন। হামলার ঘটনার আগের রাতেই গ্রেপ্তার হয়ে ঝুমন দাশ কারাগারে আছেন। এ ছাড়া হামলার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা করেছে পুলিশ। বাকি দুটি করেছেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার এবং ঝুমনের মা নিভা রানী দাশ। পুলিশ এ পর্যন্ত ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।