পেকুয়ায় একজনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক ব্যক্তিকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী গ্রামের পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম নেজাম উদ্দিন (৩৮)। তিনি বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ভারুয়াখালী গ্রামের মৃত ছবির আহমদের ছেলে।

পুলিশ বলছে, পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির বুকের মাঝে ও বুকের দুপাশে ছররা গুলির চিহ্ন এবং মাথায় দায়ের কোপের আঘাত রয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ। স্থানীয় লোকজন বলেন, নেজাম উদ্দিন স্থানীয়ভাবে ‘ডাকাত নেজাম’ নামে পরিচিত। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় লোকজন বলেন, বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী, ভারুয়াখালী গ্রামসহ পাহাড়ের পূর্ব অংশ নিয়ে বারবাকিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ রয়েছে। এই বাহিনীর প্রধান জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে খুন, মারামারি ও বন আইনে অন্তত ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে। নিহত নেজাম উদ্দিন জাহাঙ্গীরের বাহিনীর একনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। পরে ওই বাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হলে নেজাম বিদেশে চলে যান। তিন বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে আসেন। এরপর চট্টগ্রাম অবস্থান করেন এক বছর। সুযোগ বুঝে দুই বছর আগে তিনি ভারুয়াখালী এলাকায় ফিরে একটি অংশে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে জাহাঙ্গীর ও তাঁর পক্ষের মধ্যে কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

সবশেষ গতকাল শুক্রবার রাত নয়টার দিকে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে নেজাম উদ্দিনের সঙ্গে জাহাঙ্গীর বাহিনীর আবুল কালামের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কাটা গাছগুলো পাহারা দেওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা নেজাম উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে ও মাথায় কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ ঘটনায় নেজামের আরেক সহযোগী যুবায়ের আহত হলেও তিনি কোথায় চিকিৎসাধীন আছেন, তা জানা যায়নি।

আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ। এ কারণে তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি। স্থানীয় লোকজন বলেন, নেজাম উদ্দিন স্থানীয়ভাবে ‘ডাকাত নেজাম’ নামে পরিচিত। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাহাড়ি এলাকার আধিপত্য নিয়ে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে যা–ই হোক, হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।