প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

শেরপুরের ঝিনাইগাতী ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন
ছবি:সংগৃহীত

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের এক উপসচিব স্বাক্ষরিত ১ জুনের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আবুজাফর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঝিনাইগাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ইউপি কার্যালয়ের মাঠে বালু ভরাট প্রকল্পের ৭৪ হাজার ৯৩৬ টাকা, ইউপির আসবাবপত্র সরবরাহ প্রকল্পের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শৌচাগার সরবরাহ প্রকল্পের ২ লাখ টাকা উত্তোলন করে নামমাত্র ৪৫ হাজার টাকার মালামাল কিনে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

এ ছাড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন স্টেডিয়ামের পেছনে পশ্চিম দিকে রাজ্জাক মাস্টারের পুকুরপাড় পর্যন্ত মাটি ভরাট প্রকল্পের ২৯ হাজার টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের মেঝে নির্মাণ প্রকল্পের ২৪ হাজার টাকা এবং সুরিহারা ভবানীখিলা রাস্তায় সুরুজ মিয়ার বাড়ির সামনে ৩৭ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।  স্থানীয় তদন্তে ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে এসব প্রকল্পের আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। শেরপুরের জেলা প্রশাসক ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করেছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঝিনাইগাতী ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেনকে ইউনিয়ন পরিষদে ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয়। এ অবস্থায় মোফাজ্জল হোসেনের অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থে পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী তাঁকে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাময়িক বরখাস্তের আদেশের চিঠি তিনি এখনো পাননি। তবে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তিনি সরকারি টাকা যথাযথভাবে মাস্টাররোল তৈরি করে ব্যয় করেছেন। কোনো অনিয়ম বা টাকা আত্মসাৎ করেননি। একটি চক্র তাঁকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর এ বিষয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।