‘প্রকৃত মানুষ হতে চাইলে বই পড়তে হবে’

পাঠকমেলা তিন বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খ্রিষ্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িযায় সবুজ ঘাসের ওপর বসে বই পড়ে তিন বছর পার করেছে পাঠকমেলা নামের বই পড়ার একটি সংগঠন। কেককাটা, বই পড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণসহ নানা বর্ণিল আয়োজনে সংগঠনের সদস্যরা তিন বছর পূর্তি উৎসব উদ্‌যাপন করেন।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার খ্রিষ্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুলে সংগঠনের সদস্য এসব কর্মসূচির আয়োজন করেন।

এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেন, ‘আমাদের কাছে আমাদের বন্ধুদের প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু বই নামের বন্ধুর কোনো প্রত্যাশা থাকে না। বই আমাদের জাগ্রত করবে। তাই হাতের সামনে যা পাবে, তা–ই পড়বে। বই পড়ার চেয়ে ভালো কোনো কাজ আর হতে পারে না। বই আমাদের আত্মা ও বিবেককে জাগিয়ে তোলে। আমাদের প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে। প্রকৃত মানুষ সমাজের খুব দরকার। কিন্তু প্রকৃত মানুষের বড় অভাব। তাই অন্তত প্রকৃত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে বই পড়া উচিত।’

পাঠকমেলার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম, লেখক ইফতেখার হোসাইন নূর, আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম, খ্রিষ্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেইলি নিরুপমা কর্মকার, প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি শাহাদৎ হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য আর এ খান। আলোচনা শেষে  অতিথিরা সংগঠনের সদস্যদের মধ্য থেকে বাছাই করা শ্রেষ্ঠ নবীন পাঠক, শ্রেষ্ঠ পাঠক, শ্রেষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবক, শ্রেষ্ঠ সদস্য ও শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘বই এই নশ্বর পৃথিবীতে মানুষের চিরস্থায়ী বন্ধু। নিজেকে এবং নিজের সত্তাকে জানতে হলে বই পড়তে হবে। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাঠকমেলার এই বই পড়ার কার্যক্রমে সংগঠনের সব সদস্য উপকৃত হবে। একসময় বুঝতে পারবে বই পড়ার কারণে কী উপকার হয়েছে। তখন তোমরা সবাই এই সংগঠনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।’

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, দুবাইপ্রবাসী সাইদুল হাসান ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি ১৬টি বই নিয়ে পাঠকমেলার কার্যক্রম শুরু করেন। শুরুতেই সংঠনের সদস্য ছিলেন মাত্র পাঁচজন। বর্তমানে শতাধিক সদস্য আছেন। সংগঠনের সংগ্রহে এখন প্রায় দেড় হাজার বই রয়েছে। প্রতি মাসের দুই শুক্রবার সংঠনের সদস্য জেলার ফারুকী পার্কের সবুজ ঘাসের ওপর বসে বই পড়েন এবং সংগঠনের কাজ নিয়ে আলোচনা করেন।

পাঠকমেলার প্রতিষ্ঠাতা দুবাইপ্রবাসী সাইদুল হাসান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে বই সংগ্রহ করেছি। আর সদস্যরা হাত বদল করে বই পড়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুতে সদস্যসংখ্যা কম থাকলেও এখন শতাধিক সদস্য রয়েছে। আমরা কাজটি অনলাইনেও করছি। প্রতি মাসে দুইবার অবকাশে (ফারুকী পার্কে) আমরা এই কার্যক্রম করে থাকি। আমি সবাইকে বই পড়ায় আগ্রহী করতে চাই।’