প্রতারণা করে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরির চেষ্টা, আটক ৬

রংপুর জেলার মানচিত্র

ভুয়া চালানের মাধ্যমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার সময় ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে তিনটি খালি ট্রাক জব্দ করা হয়। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচার চক্রের সদস্য সন্দেহে তিন ট্রাকের চালক, তাঁদের সহযোগীসহ ছয়জনকে আটক করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সন্দেহভাজন ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হলেন দিনাজপুর জেলা সদরের বাসিন্দা ট্রাকচালক জহুরুল ইসলাম (৪৩), মো. হাবিল (২৯), মো. সুজন হোসেন (২৯) ও সহযোগী সাঈদ হাসান (২৯), সাইফুল ইসলাম (৩৪) ও আশিক রায় (২৮)। তাঁদের সবার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়।

অভিযোগ উঠেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ট্রাকচালক হাবিলের কাছ থেকে জব্দ করা বুকিং চালানে দেখা গেছে, শুধু রেজাউল নাম উল্লেখ করা এক ব্যক্তি অক্সিজেন সিলিন্ডার রংপুর থেকে ঢাকায় পরিবহনের জন্য ৪০ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া করেছেন। চালানে ট্রাকচালকের ফোন নম্বর থাকলেও বুকিং করা ব্যক্তি রেজাউলের কোনো নম্বর ছিল না। শুক্রবার সকালে দিনাজপুর থেকে তিনজন চালক, হেলপার তিনটি ট্রাকসহ রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা আড়াইটার দিকে তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছায়।

হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার স্টোরের ইনচার্জ সাঈদ বাবু বলেন, শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে হাসপাতালে এক ট্রাক অক্সিজেন সিলিন্ডার আসার কথা ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে দিনাজপুর থেকে আসা খালি ট্রাক তিনটি চালান নিয়ে স্টোরে যোগাযোগ করলে সন্দেহ দেখা হয়। এই তিনটি ট্রাকে কতটি সিলিন্ডার নেওয়া হবে, তা বলা নেই। পরে তাঁদের কথাবার্তায় সন্দেহ সৃষ্টি হলে তাঁদের আটক করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ এসে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।

সাঈদ বাবু বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এই হাসপাতাল থেকে একটি প্রতারক চক্র এখানকার অক্সিজেন সিলিন্ডার সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এটি কোনো প্রতারক চক্রের বড় ষড়যন্ত্র হতে পারে।

এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার ইনচার্জ যা বলেছেন, এটিই সঠিক হতে পারে। কেননা তিনি ভালো করে জানেন যে কারা অক্সিজেন নিতে আসে হাসপাতালে। পুরো ঘটনাটি প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে।’