প্রতি সপ্তাহে দরিদ্র মানুষকে খাওয়াবেন তিনি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া গ্রামের বন্যাকবলিত মানুষদের উন্নত মানের খাবার খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন জার্মানিপ্রবাসী ব্যবসায়ী গোলাম সরোয়ার। আজ শুক্রবার দেড় হাজার মানুষকে খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়।প্রথম আলো

বন্যাকবলিত গ্রাম টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া। একে করোনার সময়ে কাজ নেই, তার ওপর বন্যায় গ্রামের দরিদ্র মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এ দুর্ভোগকালে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামেরই এক প্রবাসী ব্যক্তি। জার্মানিপ্রবাসী এই ব্যবসায়ী গ্রামের মানুষদের সপ্তাহে একদিন উন্নত মানের খাবার খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।

জার্মানিপ্রবাসী এই ব্যক্তির নাম গোলাম সরোয়ার। তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়ি পাইকড়া গ্রামে এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আজ শুক্রবার পাইকড়া গ্রামের দেড় হাজার মানুষকে খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। পরবর্তী তিন মাস প্রতি শুক্রবার খাওয়ানো হবে গ্রামের দরিদ্র মানুষকে।

দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিতরা এভাবে নিজের বা আশপাশের গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তাহলে গ্রামের মানুষের উপকার হবে।
জুয়েল খান, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া গ্রামের বাসিন্দা

গোলাম সরোয়ার টাঙ্গাইল শহরের আদালতপাড়ার বাসিন্দা। তিনি প্রায় তিন দশক ধরে জার্মানিতে আছেন। টেলিফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাস ধরে করোনাভাইরাসের কারণে গ্রামের মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম নেই। অনেকের আয়রোজগার কমে গেছে। এর মধ্যে বন্যা দেখা দেওয়ায় তাঁদের কষ্ট আরও বেড়েছে। এর আগে গ্রামের চার শতাধিক পরিবারকে তিনি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। এবার উদ্যোগ নিয়েছেন সপ্তাহে একদিন উন্নতমানের খাদ্য পরিবেশনের।

জার্মানিপ্রবাসী ব্যবসায়ী গোলাম সরোয়ারের উদ্যগে গ্রামবাসীর মধ্যে খাবার পরিবেশন করছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। আজ শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া গ্রামে।
প্রথম আলো

আজ দুপুরে পাইকড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জুমার নামাজ শেষে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে জড়ো হচ্ছেন বাজারের কাছেই গোলাম সরোয়ারের শ্বশুর শাহাদত হোসেন খানের বাড়িতে। বাড়ির সামনের ও ভেতরের উঠানে দুই শতাধিক মানুষের বসে খাওয়ার জন্য প্যান্ডেল করা হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে খাওয়ানো হচ্ছে খিচুড়ি-মাংস। এক বৈঠক খাওয়া শেষ করে উঠে যাওয়ার পর আবার আরেক বৈঠক বসছে। স্বেচ্ছাসেবকেরা তাঁদের খাবার দিচ্ছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন পরিদর্শন করেন এ উদ্যোগ। আয়োজনের ব্যবস্থাপনায় থাকা মুনির খান বলেন, ‘কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, দুর্যোগে আক্রান্ত সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছেন গোলাম সরোয়ার।’

ওই গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ।’ আরেক বাসিন্দা জুয়েল খান বলেন, ‘দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিতরা এভাবে নিজের বা আশপাশের গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তাহলে গ্রামের মানুষের উপকার হবে।’

গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। তাই দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে থাকার জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছি। পরে গ্রামের মানুষের জন্য আরও কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’