প্রতিদিন গড়ে ৭৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি

চাঁদপুর ও আশপাশের কয়েকটি জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। আজ সোমবার পর্যন্ত গত ১১ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮৬৯ জন আইসিডিডিআরবি মতলব কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ভ্যাপসা গরমের কারণে এবং দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার খাওয়ায় লোকজন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির মতলব কেন্দ্রের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত সেখানে ৮৬৯ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৪৫০ ও নারীর সংখ্যা ৪১৯। শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৯০। পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সী ২৩ জন। বাকি রোগীদের বয়স ১৫ বছরের বেশি।

সূত্রটি আরও জানায়, চাঁদপুর সদরের ১১৩, জেলার ফরিদগঞ্জের ৬৮, হাইমচরের ১৮, হাজীগঞ্জের ৫৭, কচুয়ার ৫৪, মতলব উত্তরের ৩৮, মতলব দক্ষিণের ৪২, শাহরাস্তির ২৬, কুমিল্লার বরুড়ার ৪১, চান্দিনার ৫৭, কুমিল্লা সদরের ৩১, দাউদকান্দির ৩৫, দেবীদ্বারের ১৯, হোমনার ১৫, মুরাদনগরের ২৩, তিতাসের ৩১ এবং লক্ষ্মীপুর সদরের ৪৩, রায়পুরের ৩০ ও রামগঞ্জের ৩৩ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছে। বাকি রোগীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুরের।

আজ সোমবার দুপুরে ওই হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। চিকিৎসক ও নার্সরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। রোগী ও রোগীদের অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের গৃহবধূ সীমা বেগম বলেন, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি করায় তাঁর ছেলে মো. সাদ্দামকে (১ বছর ৫ মাস) আজ সকালে এ হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসকেরা ওষুধ ও খাবার স্যালাইন দিয়েছেন। তার অবস্থা ভালোর দিকে।

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুদের স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খেতে দেওয়া হচ্ছে। সাত মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের খাওয়ার স্যালাইন, বেবি-জিংক, মায়ের বুকের দুধ, সুজি ও খিচুড়ি খাওয়ানো হচ্ছে। অন্যান্য রোগীকে খাবার স্যালাইন, স্বাভাবিক খাবার এবং ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে।

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুদের স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খেতে দেওয়া হচ্ছে। সাত মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের খাওয়ার স্যালাইন, বেবি-জিংক, মায়ের বুকের দুধ, সুজি ও খিচুড়ি খাওয়ানো হচ্ছে। অন্যান্য রোগীকে খাবার স্যালাইন, স্বাভাবিক খাবার এবং ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে।
আল ফজল খান, আইসিডিডিআরবির মতলব কেন্দ্রের প্রধান

আইসিডিডিআরবির মতলব কেন্দ্রের প্রধান আল ফজল খান বলেন, পচা-বাসি খাবার খাওয়ায়, দূষিত পানি পান করায় এবং কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার এ সময়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কম। গত বছর এ সময় প্রতিদিন গড়ে শতাধিক ডায়রিয়া রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।