প্রতিবন্ধিতা বাধা হতে পারেনি শেরপুরের তুহিনের সাফল্যে

শ্রুতিলেখকের সাহায্য নিয়ে পরীক্ষা দেয় শেরপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মৌত্তাছিম মিল্লা তুহিন। ফাইল ছবি
শ্রুতিলেখকের সাহায্য নিয়ে পরীক্ষা দেয় শেরপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মৌত্তাছিম মিল্লা তুহিন। ফাইল ছবি

এসএসসি পরীক্ষায় শেরপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মৌত্তাছিম মিল্লা তুহিন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে সদর উপজেলার ধাতিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।


গতকাল রোববার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা পরীক্ষায় তুহিনের জিপিএ-৫ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তুহিনের এ ফলাফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও তার অভিভাবকেরা ভীষণ খুশি।


শেরপুর সদর উপজেলার মুকসুদপুর গ্রামের মো. আলাল উদ্দিন ও মমতাজ বেগমের ছেলে তুহিন। সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত তুহিনের পুরো শরীরই প্রায় অবশ। সে একা হাঁটতে পারে না। অন্যের সাহায্য নিয়ে চলতে হয়। তার দুটি হাতই বাঁকা ও শক্তিহীন। ঘাড়ও খানিকটা বাঁকা। দুই পা সোজা করে দাঁড়াতে পারে না। হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে পারে না সে। কিন্তু পড়ালেখার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। শারীরিক প্রতিবন্ধিতা তাকে দমাতে পারেনি। শ্রুতিলেখকের সহযোগিতায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সে।


®তুহিনের বাবা আলাল উদ্দিন কৃষিজীবী আর মা মমতাজ ধাতিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া। মায়ের হাত ধরেই বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করেছে সে। বাবা আলাল বলেন, তাঁর পাঁচ ছেলে–মেয়ের মধ্যে তুহিন সবার ছোট। জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার কথাও অস্পষ্ট। অনেক চিকিৎসা করিয়েও ভালো হয়নি সে। তাঁর অন্য ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করছে। তাই তুহিনকে অন্ধকারে রাখতে চাননি তিনি। পড়ালেখা করাচ্ছেন তিনি।


®গতকাল তুহিনের বাবা আলাল ও মা মমতাজ প্রথম আলোকে বলেন, ছেলের ভালো ফলাফলে তাঁরা ভীষণ খুশি। ছেলেকে এখন একটি ভালো কলেজে ভর্তি করাতে চান। এ জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তাঁরা।


®জিপিএ-৫ পাওয়ায় আনন্দিত তুহিন বলে, তার বিশ্বাস ছিল সে ভালো ফল করবে। ভবিষ্যতে পড়ালেখা শিখে স্বনির্ভর জীবনযাপন করতে করতে চায় সে। তার ইচ্ছা সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার।