প্রতিবন্ধী আসাদুল পেল হুইলচেয়ার

প্রতিবন্ধী নাতি আসাদুলের জন্য হুইলচেয়ার পেলেন ভিক্ষা করা বিধবা শহর বানুপ্রথম আলো

শেরপুরের নকলায় প্রতিবন্ধী নাতি আসাদুলের জন্য হুইলচেয়ার পেলেন ভিক্ষা করা বিধবা শহর বানু। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনার কলি মাহবুব হুইলচেয়ারটি শহর বানুর কাছে হস্তান্তর করেন।

এ সময় আসাদুলকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে তার হাতে এক সেট জামা ও শহর বানুর হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন ডিসি।

আসাদুল শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের দিনমজুর মো. রুবেলের ছেলে। তার বয়স ৭ বছর। সে শারীরিক, বাক্‌ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। আসাদুলের বয়স যখন ৪ বছর, তখন তার মা রাশেদা বেগম ঢাকার এক বাসায় ছেলেকে রেখে চলে যান। তিনি আর ছেলের খোঁজ করেননি।

এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব হুইলচেয়ারটি শহর বানুর কাছে হস্তান্তর করেন
প্রথম আলো

পরে আসাদুলের চাচি নুরেছা বেগমের সহযোগিতায় বাবা রুবেল ছেলেকে ঢাকা থেকে নকলার রামপুর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। রুবেল ছেলেকে মা শহর বানুর (৫৭) কাছে রেখে যান। সেই থেকে আসাদুল দাদি শহর বানুর কাছে থাকে। নাতি ও নিজের জীবনযাপনের জন্য তাঁকে নির্ভর করতে হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তির ওপর।

ডিসি আনার কলি মাহবুব বলেন, প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বিধবা শহর বানুকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সমাজসেবা বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁদের সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার বই দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় তাঁদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
গত ৩১ আগস্ট প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘প্রতিবন্ধী নাতিকে নিয়ে আর কত দিন ভিক্ষা করবেন বিধবা শহর বানু’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওয়ালিউল হাসান, সহকারী কমিশনার ডি এম সাদিক আল আমিন, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজু সাইদ সিদ্দিকী, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নাতির জন্য হুইলচেয়ার পেয়ে খুশি শহর বানু প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার থাইক্যা আমার ও নাতির জন্য যা কিছু করতাছেন তার জন্য আমি খুব খুশি। সেই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ডিসি ও ইউএনও সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আর ভিক্ষা করমু না। আল্লাহ আপনেগো ভালো করুক।’

আরও পড়ুন