প্রথম দিনের চাপ সামলে টোল আদায়ে গতি, যানজট নেই

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক টোল প্লাজার সামনে যানবাহনের সারি। আজ শনিবার সকালে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা ও ফরিদপুরের ভাঙ্গার মধ্যবর্তী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (এক্সপ্রেসওয়ে) চলাচলের জন্য টোল আদায় শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। প্রথম দিন টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে ধলেশ্বরী ও ভাঙ্গা টোল প্লাজা এলাকায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। তবে আজ শনিবার দ্বিতীয় দিনে দুই প্রান্তেই গাড়ির চাপ তেমন ছিল না। সকাল থেকে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে টোল আদায়ে গতি বাড়ায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।

আজ বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর এলাকায় অবস্থিত টোল প্লাজায় দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে ফরিদপুর থেকে আসা এক কাভার্ড ভ্যানচালককে বাহাস করতে দেখা যায়। তাঁর দাবি, এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা টোল প্লাজা ও পদ্মা সেতুর জাজিরা টোল প্লাজায় তিনি দুবার টোল পরিশোধ করেছেন। এখানে কেন দিতে হবে। পরে সেখানকার কর্মীরা তাঁকে বিষয়টি বোঝান।

মাদারীপুর থেকে আসা সার্বিক পরিবহনের চালকের সহযোগী আবুল হোসেন বলেন, ‘মাদারীপুর থেকে আসতে আমাদের ৩ জায়গায় ২ হাজার ৪৯৫ টাকা টোল দিতে হয়েছে। ভাঙ্গা এলাকায় এক্সপ্রেসওয়েতে ২০০ টাকা, পদ্মা সেতুর টোল ২ হাজার ও ধলেশ্বরী এলাকায় ২৯৫ টাকা টোল দিতে হয়েছে। পরপর তিন জায়গায় টোল দিতে গিয়ে আমাদের সময় নষ্ট হয়। পদ্মা সেতুসহ অন্তত দুই জায়গায় টোল দিলে আমাদের সময় অনেকটা বাঁচত এবং যানজটে পড়তে হতো না। সরকারের এ বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া দরকার।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের ধলেশ্বরী টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক নুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ছুটির দিন থাকায় যানবাহন বেশি ছিল। আগে মাওয়া মহাসড়কে ধলেশ্বরী সেতুর টোল আদায় করা হতো। গতকাল থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের কারণে অনেক সময় যানবাহন চালকেরা না বুঝে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। এতে সময় লেগেছে। তাই কিছুটা যানজট হয়েছে। তিনি জানান, টোল আদায় চালু হওয়ার প্রথম দিনে এ টোল প্লাজায় গতকাল ৪৫ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে।

গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে ৬৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৮০ টাকা টোল আদায় হয়েছে, যানবাহন পারাপার হয়েছে মোট ৪১ হাজার ৭১৪টি। এর মধ্যে ধলেশ্বরী সেতুর কাছের টোল প্লাজা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪টি। টোল আদায় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৪০ টাকা। আর ভাঙ্গা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৫ হাজার ৬৫০টি। টোল আদায় করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪ হাজার ৬৪০ টাকা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেওয়া হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক। পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটারের এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে ১টি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০, মাইক্রোবাস ৯০, প্রাইভেট কার ৫৫ ও মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলর ট্রাকের (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল ধরা হয়েছে ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪৪০ এবং মাঝারি আকারের ট্রাকের ক্ষেত্রে ২২০ টাকা দিতে হবে।