প্রধান আসামি জেলা আ.লীগের নেতা

গত সোমবার নাদিমের বাবা ইদু মিয়া মামলা করেন। এ মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইলিয়াছ মিয়া প্রধান আসামি।

মো. নাদিম

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় যুবলীগের কর্মী মো. নাদিমকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইলিয়াছ মিয়া। গত সোমবার নাদিমের বাবা ইদু মিয়া স্থানীয় থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা ইলিয়াছের ভাই সোহরাব হোসেনকেও (৫০) আসামি করা হয়েছে। তিনি মামলার ১৭ নম্বর আসামি। এর আগে গত শুক্রবার সকাল আটটায় ঘরে ঢুকে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তরা নাদিমকে কুপিয়ে হত্যা করে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন বেল্লাল হোসেন (২৮), এরশাদ মিয়া (৩০), রুবেল মিয়া (২৫), নুরুল হক (৫৫), খোকা (৪৫), কামাল হোসেন (৪২), জামাল (৪৮), ধনপুর গ্রামের মান্নান প্রকাশ (৩৫), হান্নান (৩০), আবুল কালাম আজাদ (৪৫), জোড়কানন গ্রামের রিপন মিয়া (৩৫), সোহাগ (২২), ভাটপাড়া গ্রামের আল আমিন (২৪), আলআমিন (২৫), ওয়াসিম (২৪), মান্নান ওরফে মনা (৩৫), আনিসুল হক (৪০) এহতেশামুল হক (৪২), কাশেদুল হক (৪৮), রানা মজুমদার (৪৮), মিজান (৩৫), শান্ত (২২), ছালেকা বেগম ( ৫০), সাজেদা (২৫), হোসনেয়ারা (৫০), জয়নাল (২৫), মাহফুজুল হক (৫৮)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২৪ মার্চ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিট ও ২৬ মার্চ সকাল ৮টায় বাদীর বসতভিটায় ১ নম্বর আসামি ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইলিয়াস মিয়ার নির্দেশে দুই দফা হামলা চালানো হয়। এ সময় আসামিরা নাদিমের ঘাড়, গলা, মাথা, পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে জখম করেন। পরে তাঁকে ২৬ মার্চ সকালে হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান। নাদিমের দাফনে দেরি হওয়ায় এবং ওই হামলায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিত্সা দিতে নিয়ে যাওয়ার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়। বর্তমানে নাদিমের মা রহিমা বেগম ও স্ত্রী আমেনা বেগম কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। আর নাদিমের ভাই মো. মহসিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম জোড়কানন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইলিয়াছ মিয়া ও অন্য পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন পশ্চিম জোড়কানন ইউপির চেয়ারম্যান হাসমত উল্লাহ। নাদিম চেয়ারম্যান হাসমতউল্লাহর অনুসারী ছিলেন।

নাদিমের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও মাদকের অন্তত ২৪টি মামলা রয়েছে। গত দুই বছর নাদিম খারাপ কাজ থেকে দূরে সরে আসছিলেন। এরপর থেকে তিনি হাসমতউল্লাহর সঙ্গে ছিলেন।