প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আজ মঙ্গলবার আল আমিন খান নামের এক প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ওই শিক্ষককে এভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ।

আল আমিন খান নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর আর এন টি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাকির হোসেন। এই জনপ্রতিনিধি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে সাংসদের আধা সরকারিপত্রকে (ডিও) অবজ্ঞা করেন প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান। এ কারণে স্থানীয় লোকজন ও ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁকে ঘেরাও করে রাখেন। সেখান থেকে প্রধান শিক্ষককে আমি উদ্ধার করেছি।’

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আইনজীবী জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি ১২ বছর ধরে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদে আছেন। এ অবস্থায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম কুমিল্লা বোর্ডে একটি ডিও লেটার দেন। তাতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে কমিটির সভাপতি করার কথা উল্লেখ করেন সাংসদ। এরপরও প্রধান শিক্ষক আল আমিন ওই বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি। এতে ক্ষিপ্ত হন ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।
আজ বেলা তিনটার দিকে প্রধান শিক্ষক আল আমিন উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে যান। সেখানে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে অভিভাবক প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়ে কথা বলেন। ফেরার পথে উপজেলা পরিষদের ফটকে তাঁকে ঘিরে ধরেন স্থানীয় লোকজন ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে তাঁকে নানা প্রশ্ন করেন। ঘটনার সময় সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি উপস্থিত সবার সামনে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খানকে বেশ কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারেন। আল আমিনকে এভাবে মারধরের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। পরে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে আল আমিন খানের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির বিষয়ে আলোচনা করতেই তিনি ইউএনওর কাছে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে উপজেলা পরিষদের ফটকে ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেনসহ ৩০–৪০ জন তাঁর ওপর চড়াও হন। প্রথমে তাঁর কাছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নাম বিলম্বে জমা দেওয়ার বিষয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। পরে সবার সামনে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন ভাইস চেয়ারম্যান জাকির। খবর পেয়ে ইউএনও একরামুল সিদ্দিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার বিচার চান প্রধান শিক্ষক আল আমিন।
ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউএনও একরামুল সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।