প্রধানমন্ত্রী ও এনএসআইয়ের ডিজির সই জালের অভিযোগে আটক ১

আজ মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া
প্রথম আলো

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালকের (ডিজি) মতো সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে ডিও লেটার পাঠিয়ে মানুষকে চাকরি দেওয়া, কারও বদলি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ বাণিজ্য করে আসছিলেন ওই চক্রের সদস্যরা।

ওই চক্রের প্রধানকে আটকের পর আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও নওগাঁ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে নওগাঁর মান্দা উপজেলার পাঁজরভাঙা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারক চক্রের প্রধান অসীম হোসেনকে (২০) আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি এক অভিযোগ সূত্রে এনএসআই জানতে পারে, অসীম হোসেন নামের এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে বিজিবি, কোস্টগার্ডের প্রধান দপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রেখে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে অনুসন্ধান করে এনএসআইয়ের একটি বিশেষ দল। তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ মেলায় গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলার কশব ইউনিয়নের পাঁজরভাঙা বাজারে এনএসআই ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল অভিযান চালিয়ে অসীম কুমারসহ চারজনকে আটক করে। পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক চারজনের মধ্যে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

যথাযথ প্রমাণ মেলায় গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলার কশব ইউনিয়নের পাঁজরভাঙা বাজারে এনএসআই ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল অভিযান চালিয়ে অসীম কুমারসহ চারজনকে আটক করে।

এ সময় অসীম হোসেনের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম, দুটি মুঠোফোন ও একটি হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালকের স্বাক্ষর জাল করা ডিও লেটার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া ইলেকট্রনিক ডিভাইসে পর্নোগ্রাফিও পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম মামুন খান চিশতী, আবু সায়ীদ, সুরাইয়া হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে নওগাঁ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম শামসুদ্দিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অসীম হোসেন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ডিও লেটার পাঠানোর সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এ বিষয়ক দণ্ডবিধি ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।