প্রশাসন পক্ষপাত করছে, অভিযোগ জাপা প্রার্থীর

দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণার মাঠে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ, স্বজনপ্রীতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে অন্যায় সুবিধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল। আজ শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
প্রথম আলো

দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণার মাঠে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ, স্বজনপ্রীতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে অন্যায় সুবিধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন তিনি।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল। তিনি জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদ পারভেজের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর শিকদার, জেলা সহসভাপতি মীর তহিদুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সুধীর চন্দ্র শীল, মনতোয়াজ আহমেদ প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে মেয়র প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টা পর্যন্ত শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সড়ক দখল করে মঞ্চ তৈরি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সভা করা হয়েছে। সভাসহ পুরো শহর এলাকায় কমপক্ষে ৩০টি মাইক ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশি পাহারায় সমাবেশ করা হয়েছে এবং জরুরি সেবাদানকারী দমকল বাহিনীর গাড়ি ব্যবহার করে সেখানে রাস্তায় পানি ছিটানো হয়েছে। সভা চলাকালে শহরজুড়ে যানজটে নাগরিক দুর্ভোগ, ভোগান্তি এবং চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে; যা আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুঠোফোনে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

প্রশাসন নির্বাচনী প্রচারণায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, এমন অভিযোগ করে আহমেদ শফি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত আটটায় শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকায় লাঙ্গল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হ্যান্ডমাইক কেড়ে নেন। অথচ তখনো শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা চলছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টা পর্যন্ত শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সড়ক দখল করে মঞ্চ তৈরি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সভা করা হয়েছে। পুলিশি পাহারায় সমাবেশ করা হয়েছে এবং জরুরি সেবাদানকারী দমকল বাহিনীর গাড়ি ব্যবহার করে সেখানে রাস্তায় পানি ছিটানো হয়েছে।
আহমেদ শফি রুবেল, জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী

আহমেদ শফি বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের জনপ্রিয়তা ও বিজয় নিশ্চিত বুঝে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভোট গ্রহণ এবং ফলাফল প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনারের কাছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। অন্যথায় এর সব দায়ভার স্থানীয় ও প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনারকে বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ করেননি। রাত আটটার পরে মাইক বাজানো নির্বাচনী প্রচারণার বিধির লঙ্ঘন। সে ক্ষেত্রেই কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট হয়তো মাইক বাজানো নিষেধ করেছেন। পক্ষপাতমূলক আচরণের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসন তার নিজস্ব গতিতে চলে। পক্ষপাতের কোনো সুযোগ নেই। এর আগেও অন্য একজন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা তৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাশেদ পারভেজের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত কাস্তে প্রতীকের প্রার্থী মেহেরুল ইসলামও। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাশেদ পারভেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য জানিয়েছিলেন। আজ শুক্রবার সেই নোটিশের জবাবে রাশেদ পারভেজ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার শহরের মডার্ন মোড়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা কোনো নির্বাচনী সভা ছিল না। মূলত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।