প্রাথমিকের উপবৃত্তিতে প্রতারকের হাত

পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুশিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ছাড় হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৩ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন যে উপবৃত্তির প্রথম কিস্তির টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকেরা। এবারই প্রথম এ উপবৃত্তির টাকা বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মির্জাগঞ্জে প্রকল্পভুক্ত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৪টি। সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার ৩১৩ জন। এবার সরকার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মাধ্যমে তিন মাসের (এপ্রিল, মে, জুন-২০২০) সাড়ে চার শ টাকা উপবৃত্তি দিচ্ছে। তবে টাকা তোলার আগেই একশ্রেণির প্রতারক গ্রামের সহজসরল অভিভাবকদের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে নিজেদের নগদ বা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গোপন পিন নম্বর জেনে নিচ্ছে। এরপর অভিভাবকেরা জানছেন তাঁদের জন্য বরাদ্দ সাড়ে চারশ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপজেলার ছৈলাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ঝাটিবুনিয়া, চরখালী, উত্তর আমড়াগাছিয়া, পূর্ব ঘটকের আন্দুয়া, ভাজনা কদমতলা, উত্তর গাবুয়া, দেউলী, পূর্ব আমড়াগাছিয়া ও কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৩ জন অভিভাবক প্রতারকের খপ্পরে পড়ে উপবৃত্তির প্রথম কিস্তির টাকা হারিয়েছেন বলে উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছেন।

পশ্চিম–দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেউদ্দিন মিন্টু জোমাদ্দার বলেন, ‘গত ২১ মার্চ নগদ থেকে আমার ছেলের উপবৃত্তির ৪৫০ টাকা প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে। মোবাইলে কল করে প্রতারক নিজেকে নগদের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কৌশলে পিন নম্বর জানতে চায়, পরে টাকা তুলে নিয়ে যায়।’

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মির্জাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি কে এম আবদুর রাজ্জাক বলেন, খুব শিগগির ছয় মাসের উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হবে নগদের মাধ্যমে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আরও অনেক অভিভাবক এই প্রতারণার শিকার হবেন।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জিনাত জাহান বলেন, এবার উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই একশ্রেণির প্রতারক তা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৪৩ জন অভিভাবক লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে, তাঁরা যাতে গোপন পিন নম্বর কারও কাছে হস্তান্তর না করেন।