ফতুল্লায় পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টাকালে রোহিঙ্গা তরুণীসহ গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টার অভিযোগে এক রোহিঙ্গা তরুণীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রঘুনাথপুর নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাঁদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। আজ বুধবার বিকেলে র্যাব-১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রোহিঙ্গা তরুণী নুর তাজ (১৮) ও তাঁর সহযোগী মো. সুমন (৩২)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, একটি ভুয়া জন্মনিবন্ধন, একটি পাসপোর্টের আবেদন ফরম ও একটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। সুমনের বাড়ি বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বাসুদিপাড়ায়। নুর তাজ দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করে আসছেন বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা তরুণী নুর তাজ তাঁর মা শারমিন এবং দুই ভাই আনোয়ার হোসেন ও পরশ ঢাকার মুগদা এলাকায় চার বছর ধরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত নুর তাজকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসে তাঁর সহযোগী পাসপোর্টের দালাল মো. সুমনের সহায়তায় বিদেশে যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। ওই রোহিঙ্গা তরুণী জানান, তাঁর মা–বাবা নেই। তিনি টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাঁর পালিত মা আমেনার কাছে থাকেন। তবে তাঁর কাছ থেকে জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, তাঁর বাবার নাম সাদিক, যিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। তাঁর মা শারমিন এবং দুই ভাই আনোয়ার হোসেন ও পরশ ঢাকার মুগদা এলাকায় চার বছর ধরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তার আগে কিছু সময় তাঁরা নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় বসবাস করেছিলেন।
রোহিঙ্গা হয়েও বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে নুর তাজ তাঁর মায়ের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র, তাঁর ভাই আনোয়ার হোসেনের নামে পাসপোর্ট এবং ২০২০ সালে জন্মসনদ তৈরি করে তাঁর মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা করছিলেন। গোপন সূত্রে পাওয়া এ খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাঁর কাছে থাকা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও পাসপোর্টের আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. সুমন ঢাকার মতিঝিল এলাকায় ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরির আড়ালে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট, জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে সহায়তা করে তাঁদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রমের প্রক্রিয়া চলছে।