ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের শিশু সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা

স্ত্রী ও ছোট ছেলে রাফসানের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানের শিশুপুত্র আল রাফসানকে (৯) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার পোস্ট অফিসের সামনে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ঢুকে এরশাদ মোল্লা (৩৫) নামের এক ব্যক্তি প্রথমে রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তখন ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান বেগম (৩৫) এগিয়ে এলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।

এলাকার বাসিন্দারা আল রাফসান ও দিলজাহান বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল রাফসানকে মৃত ঘোষণা করেন। দিলজাহানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রথমে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওমর ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, রাফসানকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। দিলজাহানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় দিলজাহান বেগমকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, চাপাতি দিয়ে এরশাদ মোল্লা (৩৫) নামের এক ব্যক্তি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি ঢেউখালী ইউনিয়নের ঢেউখালী মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা। সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ–সংক্রান্ত একটি সালিসের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ হয় একটি পক্ষ। এর জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কুপিয়ে জখম করায় ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে আল রাফসান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গত ৫ জানুয়ারি সদরপুর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান জয়ী হন। মিজানুর দুই ছেলের বাবা। রাফসান তাঁর ছোট ছেলে। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।