‘ফরিদপুরে বরকত-রুবেল-ফোয়াদদের রক্ত চুষতে দেওয়া হবে না’

ফরিদপুর জেলা যুবলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী। রোববার শহরের কবি জসীমউদ্‌দীন হলে
ছবি: প্রথম আলো

শহরের কবি জসীমউদ্‌দীন হলেআওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকারমুক্ত হয়েছে। কিন্তু ফরিদপুর রাজাকারমুক্ত হয়েছে গত বছর জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে কথাগুলো বলেন সাংসদ মজিবুর রহমান। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের কবি জসীমউদ্‌দীন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা যুবলীগ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী) আসনের সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে বুলবুল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের সাংসদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান।

সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ না, সাধারণ মানুষের ওপর দীর্ঘ ১২ বছর যে নির্যাতন ফরিদপুরে করা হয়েছে, তা পাকিস্তানি আর্মিরাও করে নাই। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ বিশেষ এক অভিযানের মধ্য দিয়ে ফরিদপুরের সাধারণ মানুষকে মুক্ত করা হয়েছে। মুক্ত হওয়ার পরেও কী দেখলাম, ওই রাজাকার থেকে মুক্ত করার পরে নতুন করে কিছু রাজাকারের উদয় হইছে, বেইমানের জন্ম হইছে, ফরিদপুরে বড় বড় বেইমান মোস্তাক তৈরি হচ্ছে। তারা ঢাকার বড় বড় নেতাদের দিকে তাকায় থাকে। তারা মনে করে যুবলীগ তাদের চাকর হয়ে থাকবে, তাদের বাড়িতে বাজার করে দেবে। যুবলীগের নেতৃত্বে এসব রাজাকার, বেইমান ও খন্দকার মোশতাকদের আমরা প্রতিহত করব।’

‘ওই বড় নেতারা জানেন না যুবলীগ কারও পরোয়া করে না’—মন্তব্য করে সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘দালাল বড় নেতাদের বলে যাই, ধমক খাইয়া আপনারা ভয় পাইতে পারেন। কিন্তু যুবলীগ তার পরোয়া করে না।’

সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘গত বছর জুনে যখন ভূতকে বিতাড়িত করা হয় তখন অনেক নেতার কাছে ধরনা দিয়েছিলাম রাস্তায় নামার জন্য। জেলা আওয়ামী লীগের এক বড় নেতা সেদিন ভাঙ্গা গিয়া বলেছে, আপনারা বান্দররে ঘাড়ে তুলেছেন। আমি ওই নেতাকে বলি, বান্দর ঘাড়ে চাইপা বইছে এইবার নামায় দেইখেন।’

‘ভূত নাকি পুলিশ আর প্রশাসনের ভয় দেখায়’ মন্তব্য করে সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন-পুলিশের ভয় দেখাইয়া লাভ নাই। কেননা ভূতের বাতি নিভা গেছে।’
যুবলীগে অনুপ্রবেশকারীদের কোনো জায়গা হবে না মন্তব্য করে সাংসদ মজিবুর রহমান বলেন, ‘বড় নেতারা বাঘ, ভাল্লুক মারে। আমি তো এক বড় নেতার সঙ্গে খেলতে খেলতে হাপায় গেছি। বাকি আছে ওই নেতাকে মান্দার গাছে ওঠানো। আরও অনেক বেড় নেতাকে মান্দার গাছে ওঠানোর দরকার।’

মজিবুর রহমান বলেন, ‘শহর আওয়ামী লীগের মুলা ঝারাইয়া রাখা হইছে। এখন প্রতি শুক্রবার ভয় দেখানো হচ্ছে “ভূত আসিতেছে।” আমিও বলি, ভূত আসলে আসতে দেন, আমরাও প্রস্তুত। এই ফরিদপুরে বরকত-রুবেল-ফোয়াদদের আর রক্ত চুষতে দেওয়া হবে না। আমরা দেখায় দেব, এ মাটিতে রাজাকারের কোনো জায়গা নাই। রাজাকারদের চিরতরে এ মাটি থেকে বিতাড়িত করা হবে।’