ফারাজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চিকিৎসা ও ওষুধ পেল পাঁচ শতাধিক মানুষ

ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন আয়োজিত চিকিৎসা শিবিরে সেবা নিচ্ছেন স্থানীয়রা। আজ শুক্রবার গাজীপুর সদরের বাঘেরবাজার উচ্চবিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

বেশ কদিন ধরেই ঠান্ডার সমস্যায় ভুগছিল এক বছর বয়সী মাইশা আক্তার মিম। রোগী দেখতে এলাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসার খবরে মেয়েকে নিয়ে হাজির হন মা শাপলা আক্তার। সেবা নিয়ে ফেরার পথে শাপলা আক্তার বলছিলেন, ‘বাড়ির কাছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পাইছি। চিকিৎসা ও ওষুধ পাইলাম বিনা মূল্যে।’

ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়েছে গাজীপুরের পাঁচ শতাধিক শিশু ও নারী–পুরুষ। জেলা সদরের বাঘেরবাজার উচ্চবিদ্যালয়ে আজ শুক্রবার দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়।

‘মানবতার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত চিকিৎসা শিবিরে ছয়জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন ও দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি এসকেএফের যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে স্থানীয় হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

বাঘেরবাজার উচ্চবিদ্যালয়ের ছয়টি কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বুথ স্থাপন করা হয়। স্কুল ফটকে প্রবেশের সময় প্রত্যেক সেবাপ্রার্থীকে সেনিটাইজেশনের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে। প্রত্যেক সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দিষ্ট বুথে পাঠানো হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে কথা বলে ও প্রাথমিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। পরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে স্থাপিত ডিসপেনসারিতে ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে রোগীরা ওষুধ সংগ্রহ করেন।

ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন আয়োজিত চিকিৎসা শিবিরে সেবাপ্রার্থীরা। আজ শুক্রবার গাজীপুর সদরের বাঘেরবাজার উচ্চবিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসার বিষয়ে বৃহস্পতিবার এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। টাকা ছাড়া চিকিৎসা করা হবে জেনে তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেবা দিয়েছেন। খুব আন্তরিক সেবা পেয়েছেন তাঁদের কাছ থেকে।

সেবা নিতে আসা মোছা. সেলিনা খাতুন নামের এক নারী জানান, টাকাপয়সার খরচ ও দূরত্বের কারণে চিকিৎসা করানো যাচ্ছিল না। কিন্তু বাড়ির পাশে স্কুলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসায় তিনি নিজের চিকিৎসা করিয়েছেন। মূল্যবান ওষুধ বিনা মূল্যে পেয়েছেন।

শামসুর রহমান নামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁর পায়ে ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করানো যাচ্ছিল না। শুক্রবার তিনি বিনা মূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা—দুটিই পেয়েছেন। এতে তাঁর সুবিধা হয়েছে।

আসমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের আশপাশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুব বেশি পাওয়া যায় না। চিকিৎসা করতে হলে ঢাকায় যেতে হয়। কিন্তু যানজট আর দূরত্বের কারণে যাওয়াটা সহজ নয়। ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে পেরেছি বাড়ির কাছে।’

ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশনের সহব্যবস্থাপক তাহমিদ ইবনে মাজহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন সব সময় চেষ্টা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। বিভিন্ন অঞ্চলে আমরা আই ক্যাম্প (চক্ষুশিবির) করে থাকি। সিআরপির সঙ্গে প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের নিয়ে আমাদের কর্মসূচি আছে। এবার এসকেএফের সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আমরা গ্রামপর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছি।’

তাহমিদ ইবনে মাজহার বলেন, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো. মোস্তফা আনোয়ারের দিকনির্দেশনায় গাজীপুর সদরের বাঘের বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের ক্যাম্পটিতে বিপুলসংখ্যক লোক এসেছে। ক্যাম্পটি সফল হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এ ধরনের ক্যাম্পেইন দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় চলবে।