ফেরিতে যাত্রীদের ভিড়, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

ফেরিতে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে নদী পাড়ি দিচ্ছেন লোকজন। শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাটে
ছবি: এম রাশেদুল হক

লকডাউনের কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। তবে ফেরিতে করে লোকজন পারাপার হচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে। লোকজন গা–ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না।

গত সোমবার লকডাউনের শুরুতে সীমিতভাবে ফেরি চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তখন বলা হয়েছিল, শুধু জরুরি কাজ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও রাষ্ট্রীয় কাজে ছোট ফেরি চলাচল করবে। এ ছাড়া রাতে পণ্যবাহী যানবাহন ফেরিতে পারাপার হবে। তবে গত দুদিন ধরে আগের মতো পুরোদমে ফেরি চলাচল করছে। আজ শুক্রবার এই নৌপথে ১৬টি ছোট-বড় ফেরি চলাচল করছে।

শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে দেখা যায়, সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ। এই নৌপথ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম ফেরি। যানবাহনের সঙ্গে সাধারণ যাত্রীরাও ফেরিতে করে নদী পাড়ি দিচ্ছেন।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পাটুরিয়া থেকে আসা মাধবীলতা নামক একটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে ভেড়ে। গাদাগাদি করে যাত্রীদের নামতে দেখা যায়। সাধারণ পণ্যবাহী ও অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহী ও সাধারণ যাত্রীরা ফেরি থেকে নামছেন। তাঁদের মধ্যে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় নেই।

গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মাগুরার সেলিম খান। জরুরি প্রয়োজনে তিনি সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে পৌঁছান। ঘাটে থাকা ছোট এই ফেরিতে তিনি উঠে পড়েন। তাঁর সঙ্গে আরও একজন রয়েছেন। তিনিও বাড়ি যাচ্ছেন।

ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা দুজন বলেন, ‘আমাদের একটি টাকা আয় বাড়েনি। সরকার লকডাউনের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী বহনের কথা বলে ভাড়া বাড়িয়েছে ৬০ শতাংশ। অথচ এই সুযোগে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ আদায় করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মোটেও মানা হচ্ছে না। বরং করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ছে।’

মানিকগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেলে করে কুষ্টিয়ায় যাচ্ছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিন বাড়ছে। অথচ সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। করোনা সংক্রমণের ঝুঁড়ি এড়াতে গণপরিবহন রেখে নিজ মোটরসাইকেলে করে রওনা হয়েছি। কিন্তু ফেরিতে উঠে দেখি বেহাল অবস্থা। কোথাও স্বাভাবিকভাবে দাঁড়ানোর জায়গা নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৬টি ফেরি চলছে। পণ্যবাহীসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরা ছুটছেন। বিশেষ করে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে ফেরিতে ভিড় হয়েছে।