বংশাই নদ থেকে বালু তোলার সময় এলাকাবাসীর ধাওয়া, সেতুতে বাল্কহেডের ধাক্কা

এই খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছিল। শনিবার দুপুরে উপজেলার চাঁনপুর সেতুর কাছে
ছবি : প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদে খননযন্ত্র বসিয়ে বাল্কহেডে অবৈধভাবে বালু তোলার সময় উত্তোলনকারীদের ধাওয়া দিয়েছেন এলাকাবাসী। দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় বালু বহনকারী বাল্কহেডটি নদের চানপুর এলাকার সেতুতে ধাক্কা দিয়েছে। এতে সেতুর একটি পিলারের কিছু অংশ ফেটে গেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলের এ ঘটনায় পুলিশ বাল্কহেডটি জব্দ করেছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের বালু ব্যবসায়ী কবীর হোসেন ও পার্শ্ববর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার জাকির হোসেন তাঁদের লোকজন দিয়ে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের আত্মারামপাড়া এলাকায় বংশাই নদে খননযন্ত্র বসিয়ে বাল্কহেডে বালু তুলছিলেন। এ সময় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাঁদের ধাওয়া দেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় চানপুর সেতুর ৩ নম্বর পিলারে (উত্তর পাশ থেকে) ধাক্কা দেয় বাল্কহেডটি।

একপর্যায়ে চানপুর গ্রামের লোকজন সেতুর ওপর থেকে বাল্কহেডে থাকা শ্রমিকদের ইটপাটকেল মারতে থাকেন। এতে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার মোহাম্মদ হোসেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের মো. মুছা মিয়া ও রবিন ইসলাম আহত হন। তাঁরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাল্কহেডটি জব্দ করে।

উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য চানপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক বলেন, বালু তোলার কারণে এমনিতেই নদের তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আবারও নদ থেকে বালু তোলায় স্থানীয় ব্যক্তিরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তা ছাড়া যে স্থান থেকে বালু তুলছিলেন, তা চানপুর সেতুর খুব কাছে। সেখান থেকে বালু তোলা হলে যেকোনো মুহূর্তে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

জানতে চাইলে বালু ব্যবসায়ী কবির হোসেনের কাজের দেখভালকারী সোহেল মিয়া বলেন, সরকারিভাবে নদী খননের জন্য কাজ পেয়েছেন তাঁরা। এর অংশ হিসেবে বালু তুলছিলেন। এতটুকু বলেই কল কেটে দেন তিনি।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে এই বাল্কহেডে রাখা হচ্ছিল। বাল্কহেডটি জব্দ করেছে পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) একরামুল হক। তিনি বলেন, বাল্কহেডটি স্থানীয় নিয়াজ আলী নামের এক ব্যক্তির জিম্মায় রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ওই স্থানে নদী খননের কোনো কাজ নেই বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বালু উত্তোলনকারীরা সত্য বলেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, সেতুর কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তা আগামীকাল (রোববার) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা হবে। এরপর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।