বগুড়া পৌর নির্বাচনে সকাল থেকে ভোটারদের দীর্ঘ সারি

বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন নারী ভোটাররা। রোববার সকালে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: সোয়েল রানা

২১টি ওয়ার্ডে ১১৩টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বগুড়া পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। শহরতলি ও পৌরসভার বর্ধিত ওয়ার্ডগুলোতে আজ রোববার সকাল থেকেই নারী ভোটারের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে। অবশ্য প্রথম দেড় ঘণ্টায় শহরের কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম চোখে পড়ে। ভোটের সার্বিক পরিবেশে সন্তুষ্ট প্রার্থীরাও। ভোট শুরু হয় সকাল ৮টায়। বিরতিহীন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভোটাররা বলছেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর অন্য কোনো ভোটে এমন সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠু পরিবেশ দেখেননি তাঁরা। কেউ কেউ এই ভোটকে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের ‘আস্থা’ ফেরানোর ভোটও বলে মন্তব্য করেছেন।

সকাল আটটার দিকে শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেউজগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছিল পুরুষ ভোটারের দীর্ঘ সারি। অন্যদিকে সকাল সোয়া আটটায় একই ওয়ার্ডে জামিলনগর মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে নারী ভোটারের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। এখানে ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীরগতির কারণে বিরক্তি প্রকাশ করেন ভোটাররা। নারী ভোটারের রেকর্ড উপস্থিতির চিত্র ছিল ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রেও।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল থেকে নারী ও পুরুষ ভোটারের ঢল নামে। এখানে ভোট দিতে আসা ভোটার শাহিনুর ইসলাম ও লায়লা বেগম জানান, প্রায় এক যুগ পর মনে হচ্ছে সত্যিকারের ভোট দিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর এমন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ অন্য কোনো নির্বাচনে দেখেননি।

ভোট দিতে পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ সারি। রোববার সকালে বগুড়া সেউজগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে
ছবি: সোয়েল রানা

সকাল নয়টার দিকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র ছিল অনেকটা ভোটারশূন্য। ভোটসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এখানে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে জানান এখানকার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।

সকাল সাড়ে আটটায় শহরের কালিতলা হাসনাজাহান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ভোট দেন বিএনপি-সমর্থিত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম। ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সব কেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। পরিবেশ এ রকম থাকলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।

সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত নৌকার প্রার্থী আবু ওবায়দুল হাসান অবস্থান করছিলেন শহরের টাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভোট এখনো দেননি, তবে ভোটের সার্বিক পরিবেশ দেখে খুশি তিনি। বলেন, ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ হচ্ছে। ফলাফল মেনে নিতে প্রস্তুত তিনি।

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত আছেন। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে ৪ জন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৫ জন করে অস্ত্রধারী পুলিশ ও ৮ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।