বগুড়ায় ইউপি নির্বাচনে আ.লীগ ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর ১৪ সমর্থক আহত

বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলীম উদ্দীনের নির্বাচনী কার্যালয় দলটির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বদরুল আলমের কর্মীরা ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে দাড়িয়াল বাজারে
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের দাড়িয়াল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর দুটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে নুনগোলা ইউপি নির্বাচনে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মহড়া দেন নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলীম উদ্দিনের কর্মী–সমর্থকেরা। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁরা দাঁড়িয়াল বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুল আলমের (আনারস প্রতীক) নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিদ্রোহী প্রার্থীর সাতজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনার পর নৌকার কর্মীদের হামলায় আনারসের কর্মী নিহত হয়েছেন—এলাকায় এখন গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তা শুনে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা একজোট হয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, বুধবার নৌকার প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকেরা প্রথমে আনারস প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয় ও কর্মীদের ওপর হামলা চালান। নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আনারসের কর্মী নিহত হয়েছেন–এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে নৌকার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।

হামলা ও সংঘর্ষে আহত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক মেহেদুল ইসলাম (৩২), আবদুল গফুর (৪২), বেলাল (৪২) ও বাবু (৩২) এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক গফুর (৪৮), মিনার (৩২), ফজলু (৩৪) ও আজিজারকে (৪৫) বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুল আলম বলেন, ‘নৌকার প্রার্থীর পক্ষে শহর থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা এসে বুধবার রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন। বিনা উসকানিতে তাঁরা আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে সাতজনকে কুপিয়ে আহত করেন। তাঁদের উদ্ধার করে পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিজেদের দোষ অন্যের ওপর চাপাতে পরে নিজেরাই নিজেদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও তাঁর কর্মী–সমর্থকদের কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী আলীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় নৌকার কর্মী সমবেশ ছিল। এতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দেন। পরে নৌকার প্রার্থীর সমর্থনে কর্মীরা নির্বাচনী মিছিল বের করেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে  আনারসের কর্মীরা উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে নিজেরা তাঁদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন। এরপর তাঁরা নৌকার মিছিলে হামলা চালিয়ে ২০-২৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ছাড়া আনারসের প্রার্থী বদরুল আলমের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা নৌকার কার্যালয়ে হামলা চালান। এতে তাঁর অন্তত সাতজন কর্মী আহত হয়েছেন।