বগুড়ায় দুই পায়ের রগ কেটে স্কুলশিক্ষককে হত্যা

হত্যার প্রতীকী ছবি
প্রথম আলো

বগুড়ায় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্বৃত্তরা তাঁর পায়ের রগ কেটে রাস্তায় ফেলে রেখে গিয়েছিল। গত বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটার পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার সকালে মারা গেছেন তিনি।

ওই শিক্ষকের নাম সাইফুল ইসলাম (৫৫)। তিনি সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মাঝবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। গতকাল সকালে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের হরিণা ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন একটি কাঁচা রাস্তা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর দুই পায়ের রগ কাটা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ফুলবাড়ি ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে সারিয়াকান্দি থানা-পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে খেতে কাজ করতে যাওয়ার সময় কৃষকেরা সাইফুল ইসলামকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্বজনদের খবর দেওয়া হলে তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন বলেন, দুই পায়ের রগ কেটে স্কুলশিক্ষক সাইফুল ইসলামকে হত্যার বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে জেনেছেন। এ বিষয়ে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা বা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জমিজমা নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

নিহত ব্যক্তির ভাতিজা স্বপন ইসলাম মুঠোফোনে জানান, সাইফুল ইসলাম বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ বসবাস করতেন। সেখান থেকেই তিনি গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে যাতায়াত করতেন। বুধবার রাত নয়টার দিকে বগুড়া শহরের বাসা থেকে নারুলী বাজারে চা খাওয়ার জন্য বের হওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে মাঝবাড়ি গ্রামের অদূরে হরিণা ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন কাঁচা রাস্তায় দুই পায়ের রগ কাটা ও অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

স্বপন ইসলাম আরও জানান, জমি নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর চাচার বিরোধ আছে। এ নিয়ে মামলাও চলছে। এ ছাড়া স্কুলেও অন্যদের সঙ্গে বিরোধ আছে। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তিনি তাঁর চাচার সঙ্গে ছিলেন। কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তা সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি সুস্থ হওয়ার পর জানাবেন বলেছিলেন। কিন্তু সুস্থ হওয়ার আগেই তিনি মারা গেছেন। লাশ দাফন শেষে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করা হবে বলেও জানান স্বপন ইসলাম।