বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

সারিয়াকান্দি উপজেলার খাটিয়ামারী চরে হাজারো বানভাসি মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ঘরের বারান্দায় মাচা ও কলার ভেলায় বসে দিনাতিপাত করছেন তাঁরা। বগুড়া, ১৬ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
সারিয়াকান্দি উপজেলার খাটিয়ামারী চরে হাজারো বানভাসি মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ঘরের বারান্দায় মাচা ও কলার ভেলায় বসে দিনাতিপাত করছেন তাঁরা। বগুড়া, ১৬ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

উজানের ঢলে যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি বেড়ে বগুড়ার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় যমুনার পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আর বাঙ্গালীর পানি ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৩ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দুই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর বিপৎসীমা নির্ধারিত ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ১৭ দশমিক ৬৯ মিটার দিয়ে, অর্থাৎ বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আজ দুপুর ১২টায় ১৭ দশমিক ৮৩ মিটার, অর্থাৎ বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আর বাঙ্গালী নদীতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পানি প্রবাহিত হয়েছে ১৫ দশমিক ৮৬ মিটার ওপর দিয়ে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় সেখানে পানি রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৯৯ মিটার। বাঙ্গালী নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারিত ১৫ দশমিক ৮৫ মিটার।

সারিয়াকান্দি উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামে বাড়ির উঠানে বুকসমান পানি। সেখানে কারেন্ট জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন মোর্শেদা বেগম। বগুড়া, ১৬ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
সারিয়াকান্দি উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামে বাড়ির উঠানে বুকসমান পানি। সেখানে কারেন্ট জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন মোর্শেদা বেগম। বগুড়া, ১৬ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

বগুড়া জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা বলছে, যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত বুধবার পর্যন্ত জেলার ১৯টি ইউনিয়নের ১৫৮টি গ্রামের ৩১ হাজার ৮৩৬ পরিবারের ১ লাখ ২৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী ছিল।

নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় এখন বন্যাকবলিত ইউনিয়নের সংখ্যা ২৪ ও গ্রামের সংখ্যা ১৬২। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা ৩২ হাজার ৩৬। দুর্গত এলাকায় বানভাসি মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার ৭১৫। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত কৃষকের ৯ হাজার হেক্টর জমির পাট-ধান, বীজতলাসহ আবাদি ফসল। বানভাসি কয়েক হাজার পরিবার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, গুচ্ছগ্রাম, আশ্রয়কেন্দ্র ও চরের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজহার আলী মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, দুর্গতদের জন্য নতুন করে ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকো গো–খাদ্যবাবদ ৪ লাখ টাকা এবং শিশুখাদ্য বাবদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ মিলেছে।