বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট
সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট দেখা দিয়েছে। মহাসড়কটিতে জরাজীর্ণ নকলা সেতু ও সম্প্রতি মহাসড়কের ধোপাকান্দি সেতুটি ভেঙে পড়ায় বিভিন্ন সময় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে এই যানজট।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কার্যালয় এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কের ফুলজোড় নদের ওপর নকলা সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে আঞ্চলিক সড়কটি মহাসড়কে পরিণত হলেও সেতুটির কোনো পরিবর্তন বা সংস্কার করা হয়নি। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধনের পর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করছে এ সেতু দিয়েই। এ কারণে সেতুটি একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া এই মহাসড়কের ধোপাকান্দিতে একটি অস্থায়ী স্টিলের সেতু নির্মাণ করা হলেও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেটিও ভেঙে পড়েছে।
আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান করে দেখা যায়, নকলা সেতুর পশ্চিম পাশে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল আকারের বেশ কয়েকটি গর্ত। সেতুর ওপরের অংশে উঠে গেছে কার্পেটিং। সেতুর সংযুক্ত স্থল হয়ে পড়েছে নড়বড়ে। সেতুর ৫০ মিটার দূর থেকেই কমিয়ে দিতে হচ্ছে গাড়ির গতি। এ কারণে সেতুর উভয় প্রান্তে সব সময়ই শত শত যানবাহন আটকে জটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের ধোপাকান্দি এলাকায় ভেঙে পড়া সেতুর সংস্কারকাজ চলছে। এ কারণে যানজটের তীব্রতা কয়েক গুণ বেড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
নাটোর থেকে আসা ট্রাকচালক আবদুল হামিদ বলেন, নকলা সেতু ও সড়ক সংস্কার না করায় চালক-যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। মহাসড়কটির এই অংশ খারাপ হওয়ায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
গাইবান্ধা থেকে আসা বাসের যাত্রী সেরেনা বেগম, সবুজ হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সিরাজগঞ্জ রোড (হাটিকুমরুল গোলচত্বর) এলাকায় এলেই আতঙ্ক শুরু হয়। কতক্ষণে এই অংশটুকু পার হওয়া যাবে, সেই চিন্তা কাজ করে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, নকলা সেতুর দুই পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর ওপরেও রয়েছে খানাখন্দ। এখানে এসেই গাড়ির গতি কমিয়ে দিতে হয়। এ কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, নকলা সেতু ও ধোপাকান্দি সেতুকে ঘিরে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময় এই মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করতে হয়।
সিরাজগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে অতিবৃষ্টির কারণে দ্রুত এসব উন্নয়নকাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলেই কার্পেটিং করা হবে। এ ছাড়া ধোপাকান্দি সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।