বন্ধ ঘরে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ, বিছানায় মিলল ‘সুইসাইড নোট’

প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় একটি ছাত্রীনিবাসের (মেস) কক্ষের তালা ভেঙে জলি খাতুন (২১) নামের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার মধ্যরাতে শহরের কামারগাড়ি এলাকার মুগ্ধ ছাত্রীনিবাসে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল লাশটি। এ সময় তাঁর বিছানার কাছ থেকে পাঁচ লাইনের একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য নাজমুল দায়ী, নাজমুল ছাড়া অন্য কেউ দায়ী নয়। একজন মেয়ে কী পরিস্থিতিতে, কতটা কষ্টে আত্মহত্যা করে...’।

জলি খাতুন সরকারি আজিজুল হক কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা উপজেলার ঘুড়কা বাজার এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ, সহপাঠী ও মেসের বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, জলি খাতুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নিজ এলাকার নাজমুল নামের এক তরুণের। নাজমুলও বগুড়া শহরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। জলি খাতুন বগুড়া শহরের কামারগাড়ি এলাকার মুগ্ধ ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে থেকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে পড়াশোনা করতেন।

বুধবার রাতে মেসের অন্য মেয়েদের সঙ্গে গল্প করছিলেন জলি। এ সময় তাঁর মুঠোফোনে একটি কল আসে। কথা বলতে বলতে নিজ কক্ষে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেন। দীর্ঘক্ষণ কক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অন্যরা ডাকাডাকি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা জানালার ইট সরিয়ে দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে জলির লাশ ঝুলছে।

পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে সদর থানা পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করেই জলি খাতুন নামের ওই কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার আগে পাঁচ লাইনের একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে গেছেন। সেখানে ওই ছাত্রী আত্মহত্যার জন্য তাঁর প্রেমিককে দায়ী করে গেছেন। এখন আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে নাজমুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।