বন্ধ বিপণিকেন্দ্রগুলো ভূমিকম্পে কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ, পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল

ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিকেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের একটি দল। ছবিটি নগরের জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশন থেকে তোলা
আনিস মাহমুদ

সিলেটে কয়েক দফা ভূকম্পনে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠা নগরের ছয়টি বিপণিকেন্দ্র ও একটি দোকান ১০ দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সিটি করপোরেশন। গত ৩১ মে এই নির্দেশনা জারির পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে এসব বিপণিকেন্দ্র চালুর কথা ছিল। তবে এগুলো চালুর আগে কতটুকু ব্যবহারের উপযোগী, এর যাচাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে গঠিত একটি দল পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এ কাজ করছে। দলটি বিপণিকেন্দ্রগুলো কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা ব্যবহারের উপযোগী, তা জানার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। এ দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাবিপ্রবির পুর ও পরিবেশকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. জহির বিন আলম। তাঁর সঙ্গে দলে আছেন পুর ও পরিবেশকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. বশিরুল হক ও সহকারী অধ্যাপক মুহাইমেনুল হক।

শাবিপ্রবির বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী রজি উদ্দিন খান ও উপসহকারী প্রকৌশলী বিজিত চন্দ্র দে উপস্থিত আছেন। দলটি সুরমা মার্কেট (তিনতলা), মধুবন সুপার মার্কেট (ছয়তলা), মিতালী ম্যানশন (পাঁচতলা) ও রাজা ম্যানশন (তিনতলা) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। পরে দ্বিতীয় দফায় আজ বিকেল চারটা থেকে আরেকটি বিশেষজ্ঞ দল অপর তিনটি বিপণিকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করবে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে সুরমা মার্কেটটি পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পর্যবেক্ষণের কর্মসূচি শুরু হয়।

পর্যবেক্ষণ চলাকালে অধ্যাপক জহির বিন আলম প্রথম আলোকে বলেন, পর্যবেক্ষণ শেষে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এর আলোকে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিপণিকেন্দ্রগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

গত সোমবার এবং গত সপ্তাহের প্রথম দুই দিনে সিলেটে মোট আটবার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এগুলোর উৎপত্তিস্থল সিলেটের বিভিন্ন এলাকা। রিখটার স্কেলে সোমবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। প্রথম দফার ভূমিকম্পের পর গত ৩১ মে থেকে নগরের ছয়টি বিপণিকেন্দ্র ও জিন্দাবাজারের ‘জেন্টস গ্যালারি’ (দুইতলা) নামের একটি দোকান ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়।

পরে গতকাল বুধবার বিকেলে এক সভা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নগরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে সম্মত হয়। এর অংশ হিসেবে সিলেট নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের ৪২ হাজার ভবনে সমীক্ষা চালিয়ে কতটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, সেসব চিহ্নিত করবে শাবিপ্রবির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপকদের একটি দল। নগরে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়াতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এ কাজে লোকবল ও আর্থিক সহযোগিতা দেবে সিটি করপোরেশন।