বন্ধ হলে থাকছে ছাত্রলীগ, মারামারিতে আহত ২

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যাল
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কোনো ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা নেই। তবু চারটি হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে থাকা ছাত্রলীগের দুটি হলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে গতকাল সোমবার রাত ১০টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে হাতাহাতি ও মারামারি হয়েছে। এতে অন্তত দুজন গুরুতর আহত হন।

ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল বন্ধ। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিয়মিত হলে থাকছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই বন্ধ ক্যাম্পাসে তাঁদের থাকতে দিচ্ছেন। এর আগেও করোনাকালেই গত ডিসেম্বরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের সামনের সড়কে মারামারি করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জেরে গতকাল রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরীর বাসভবনের সামনে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের কর্মী সালমান চৌধুরী অন্তত ১০ জন সঙ্গী নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের কর্মী সোহেল হাওলাদারের ওপর হামলা করেন। এ সময় সোহেল হাওলাদারের ডান চোখের ওপরে জখম হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াসিফুল ইসলামসহ আরও অন্তত আটজন সোহেলের সাহায্যে এগিয়ে এলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, কিলঘুষি ও মারামারি হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের কর্মী প্রীতম সেনও আহত হন। পরে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

যাঁরা বিশৃঙ্খলা করেছেন, তাঁদের ছাত্রলীগে ঠাঁই নেই। যেহেতু ক্লাস ও পরীক্ষা নেই, তাই দলীয় নেতা-কর্মীদের হল ছাড়তে বলব। তাঁদের ছুটি দিয়ে দেব।
মো. ইলিয়াছ মিয়া, সভাপতি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ

জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের সোহেল হাওলাদার বলেন, ‘ক্যাম্পাসের সামনের হোটেল থেকে খাবার নিয়ে হলে ফেরার পথে আকস্মিক কোনো কারণ ছাড়াই আমার ওপর হামলা করা হয়। আগে সালমানের সঙ্গে আমার বিরোধ থাকলেও সেটি মিটমাট করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।’

তবে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সালমান চৌধুরী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি ওদের মারামারি দেখে ঘটনাস্থলে গিয়েছি।’

এখন তো হল বন্ধ। কিছু ছাত্র হল থেকে হয়তো কাগজপত্র-বই নিতে এসেছেন। আমার দপ্তরের সামনে মারামারি হয়েছে কি না, জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।
এমরান কবির চৌধুরী, উপাচার্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াছ মিয়া বলেন, ‘যাঁরা বিশৃঙ্খলা করেছেন, তাঁদের ছাত্রলীগে ঠাঁই নেই। যেহেতু ক্লাস ও পরীক্ষা নেই, তাই দলীয় নেতা-কর্মীদের হল ছাড়তে বলব। তাঁদের ছুটি দিয়ে দেব। দুই হলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বসে বিষয়টি মিটমাট করে দেব।’

প্রক্টর কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব।’

এদিকে ছাত্রলীগের হলে থাকার ব্যাপারটি অস্বীকার করে উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘এখন তো হল বন্ধ। কিছু ছাত্র হল থেকে হয়তো কাগজপত্র-বই নিতে এসেছেন। আমার দপ্তরের সামনে মারামারি হয়েছে কি না, জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’