বন্ধুর সহায়তা নিয়ে খুন করা হয় বগুড়ার কলেজছাত্র আরমানকে

আরমান হোসেন

৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধুর মাধ্যমে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বগুড়ার কাহালু উপজেলার কলেজছাত্র আরমান হোসেনকে (১৮)। প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় ওই নারীর স্বামী আরমানকে সরিয়ে দিতে এই হত্যার পরিকল্পনা করেন।

আরমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি সুজন (২২) আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন। মঙ্গলবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তার অপর আসামি ওবাইদুর রহমান খানের (৪০) তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

সুজন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার সহলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বগুড়ার কাহালু উপজেলার ডোমরগ্রামে এক ব্যক্তির মুরগি ও মাছের খামারে পাহারাদারের কাজ করতেন। অন্যদিকে ওবাইদুর ডোমরগ্রাম পূর্বপাড়ার বাসিন্দা।
নিখোঁজ হওয়ার ১১ ঘণ্টার মাথায় সোমবার সকালে ডোমরগ্রামের কলেজছাত্র আরমান হোসেনের লাশ একটি পুকুরপাড়ের কবরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয়। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে সুজনের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন আরমান। তিনি উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের ডোমরগ্রামের আজিজার রহমান প্রামাণিকের ছেলে। গাইবান্ধা সরকারি কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, আরমানের বাবা আজিজার রহমান বাদী হয়ে মঙ্গলবার কাহালু থানায় পুত্র হত্যার দায়ে সুজন ও ওবাইদুরকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সুজন ও ওবাইদুরকে আগেই গ্রামবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন।
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার সুজনকে মঙ্গলবার বগুড়ার আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, কলেজছাত্র আরমানের সঙ্গে তাঁর সখ্য তৈরি হয়। ওবাইদুরের স্ত্রীর সঙ্গে আরমানের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। ওবাইদুর এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে আরমানকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরমানকে বাড়ি থেকে নির্জন স্থানে ডেকে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সুজনকে। সে অনুযায়ী রোববার রাতে তাঁকে বাড়ির বাইরে পুকুরপাড়ে ডেকে নেন সুজন। এরপর সেখানে ওবাইদুরসহ আরও দু-তিনজন উপস্থিত হয়ে হত্যা মিশনে অংশ নেন। আরমানের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করতে মাটিচাপা দেওয়া হয়। হত্যাকারীদের সঙ্গে নিজেও অংশ নিয়েছেন তিনি।