বরগুনায় ৭০টি সেতু চলাচলের অনুপযোগী, দুর্ভোগ

সেতুগুলোর মধ্যে আমতলীর ৪০টি ও তালতলীর ৩০টি সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বরগুনার আমতলীর বাইনবুনিয়া নদীর ওপরের সেতুটি সুপারি গাছ ও বাঁশ দিয়ে যুক্ত করে যাতায়াত করছেন লোকজন। সম্প্রতি তোলা ছবি
প্রথম আলো

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বরগুনার আমতলী ও তালতলীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মিত লোহার ৭০টি সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া উপজেলা দুটিতে ১৮টি সেতু ভেঙে পড়ে আছে। এ কারণে এসব এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে রয়েছে।

এলাকার লোকজন জানান, সেতুগুলো নির্মাণ ও সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন সময় তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। এরপরও এসব সেতু সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে না।

আমতলীর চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সেতু ভেঙে পড়ে আছে। এসব সেতু দ্রুত নির্মাণের জন্য এলজিইডির প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব।’

তালতলীর ছাতনপাড়া এলাকার লোহার সেতুটি ভেঙে গেছে। সম্প্রতি তোলা ছবি
প্রথম আলো
ব্যবহারের অনুপযোগী ও ধসে পড়া সেতুগুলো নির্মাণের জন্য এলজিইডির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মোস্তাইন বিল্লাহ, জেলা প্রশাসক, বরগুনা

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, আমতলী ও তালতলী উপজেলায় লোহার ১০০টি সেতু আছে। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে এলজিইডির ‘হালকা যান চলাচল প্রকল্পের’ অধীনে এসব সেতু নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে আমতলীর ৪০টি ও তালতলীর ৩০টি সেতু চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এলাকার লোকজন জানান, নির্মাণের পর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ না নেওয়ায় সেতুগুলো জরাজীর্ণ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ২০০৯ সালে আইলায় অধিকাংশ সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুগুলোর সিমেন্টের স্লিপার, হাতল ও অবকাঠামো ভেঙে পড়ে। অনেক স্থানে সেতুর হাতল, অ্যাঙ্গেলসহ মালামাল চুরি হয়ে যায়।

কয়েক দিন ঘুরে দেখা যায়, আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া, আঠারোগাছিয়া, তাফালবুনিয়া ও কালামপুর মরিচবুনিয়া এলাকার সেতুগুলোর হাতল, অ্যাঙ্গেল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। গুলিশাখালী উত্তর ডালাচারা এলাকার হারুন মোল্লার বাড়ির সামনের সেতুটির নিচের লোহার কাঠামোয় মরিচা ধরেছে। বাইনবুনিয়া নদী ও দক্ষিণ তক্তাবুনিয়ার বাঁশবুনিয়া খালের ওপরের সেতু দুটি ভেঙে পড়ে আছে। তালতলীর শানুর বাজার এলাকার সেতুটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব ফাটলে কাঠের গুঁড়ি দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। বেহালা এলাকার সেতুটি মাঝবরাবর ভেঙে পড়ে গেছে। ছাতনপাড়ায় সেতু ভেঙে একদিকে কাত হয়ে পড়ে আছে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ব্যবহারের অনুপযোগী ও ধসে পড়া সেতুগুলো নির্মাণের জন্য এলজিইডির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এসব সেতু জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ করা দরকার।