বরাদ্দের টাকা পেতে ভুয়া ভাউচারই ভরসা

বিদ্যালয়ের মেরামত কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হলেও কোনো কাজই বাস্তবায়ন হয়নি। গত মঙ্গলবার সদর উপজেলার বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

দোকানের নাম এ ওয়ান সুপারশপ। শহরের অভিজাত এই বিপণিবিতানে দেশি-বিদেশি প্রসাধনসামগ্রী পাওয়া যায়। কিন্তু এখান থেকে ‘পাথর ও বালু কিনে’ ভবনের ছাদ ঢালাই করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা তুলে নিয়েছে একটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আরাজী দক্ষিণ বঠিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমনটি ঘটেছে। শুধু এই বিদ্যালয়ই নয়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতের জন্য মাইনর ক্যাটাগরি ও রুটিন মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের টাকা তুলতে প্রায় সব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তথ্য অধিকার আইনে পাওয়া তথ্য ও প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যালয়গুলো কেনাকাটা না করেই দোকান থেকে ফাঁকা ভাউচার সংগ্রহ করে। এরপর তাতে প্রাক্কলন (এস্টিমেট) অনুযায়ী লিখে বরাদ্দের টাকা তুলে নেয়। আর এই ভুয়া ভাউচার তৈরিতে উপজেলা শিক্ষা ও প্রকৌশলীর কার্যালয়ের লোকজন সহায়তা করেছেন। আবার সরেজমিন দেখা গেছে, টাকা তোলা হলেও অনেক বিদ্যালয়ে কোনো কাজই হয়নি।

উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, পিইডিপি-৪-এর আওতায় ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৮৫টি বিদ্যালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ পায়। এ টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের জানালা-দরজা, গ্রিল, শৌচাগার মেরামত, রং-বার্নিশ করানোসহ বিভিন্ন ধরনের হালকা মেরামতের কাজ করানোর নির্দেশনা ছিল। বিদ্যালয়গুলোতে কাগজে-কলমে ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত দেখানো হয়।

কাগজে-কলমে টাকা তোলার নিয়ম

প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী কোন কোন খাতে মেরামত প্রয়োজন, তার তালিকা করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে অনুমোদন নেন। এরপর তা প্রাক্কলন প্রস্তুতের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে যায়।

উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে প্রাক্কলন পেয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দের সমপরিমাণ টাকা খরচ করবে। এরপর উপজেলা প্রকৌশলীর কাছ থেকে কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে, এমন ছাড়পত্র নিয়ে ভাউচারসহ তা শিক্ষা কার্যালয়ে জমা দেয়। সেই ভাউচার ও ছাড়পত্র হাতে পেয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বরাদ্দের টাকার জন্য হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে টাকা ছাড় হলে শিক্ষা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে তা পাঠিয়ে দেন।

বাস্তবে যা ঘটছে

অনুসন্ধান বলছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বরাদ্দের টাকা পেতে খরচ না করেই দোকান থেকে ফাঁকা ভাউচার সংগ্রহ করে। এরপর তাতে প্রাক্কলন অনুযায়ী লিখে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেয়। পরে বিদ্যালয় থেকে পাওয়া খরচের ভাউচার হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে পাঠিয়ে সেখান থেকে টাকা ছাড় নিয়ে বরাদ্দের টাকা তিনি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দেন। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই টাকা মেরামতে খরচ করে। নিয়ম রক্ষায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খরচের পর প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে, উপজেলা প্রকৌশলীর কাছ থেকে এমন ছাড়পত্র নেয়।

মেসার্স নান্নু ব্রাদার্স, ওমর ব্রাদার্স, ঢাকা ফার্নিচার মার্টের মালিকেরা বলছেন, তাঁদের দোকানের মালামাল কেনার নামে যে ভাউচার দেখানো হয়েছে, তা জাল। তাঁদের দোকানে এমন সব রসিদ ব্যবহৃত হয় না।

বিদ্যালয়গুলোর মেরামতকাজ দেখে সন্দেহ হয় সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকার এক যুবকের। তিনি ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯-২০ অর্থবছরে সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতের প্রকল্পের ভাউচারের অনুলিপি চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে আবেদন করেন। গত ১১ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ তাঁর কাছে সদরের ৮৫টি বিদ্যালয়ের ২ হাজার ১০৩টি ভাউচার হস্তান্তর করে। পরে তিনি ভাউচারগুলো এই প্রতিবেদকের হাতে তুলে দেন।
তথ্য বিশ্লেষণে যা পাওয়া গেল

সদর উপজেলার ৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রড, সিমেন্ট কেনায় খরচ করেছে ৫৩টি বিদ্যালয়। আর এর মধ্যে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মেসার্স নান্নু অ্যান্ড ব্রাদার্সের মেমো (রসিদ) ব্যবহার করেছে ৩৬টি বিদ্যালয়। আসবাব কিনেছে ৪৯টি বিদ্যালয়। তার মধ্যে ৩২টি বিদ্যালয় ব্যবহার করেছে নরেশ চৌহান সড়কের ঢাকা ফার্নিচার মার্টের রসিদ। বৈদ্যুতিক সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি কেনা ৪৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩১টি বিদ্যালয়ই কিনেছে বঙ্গবন্ধু সড়কের হাবিব স্টোর থেকে। রং কেনার ক্ষেত্রে ৫০টির মধ্যে ২৯টির রসিদ দেখা গেছে সমবায় মার্কেটের ওমর ব্রাদার্সের।

অন্যদিকে ৫০টি বিদ্যালয়ে অবকাঠামো উন্নয়নে ইট ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার সারলী গ্রামে অবস্থিত থ্রি স্টার নামে ইটভাটার ক্যাশ মেমো ব্যবহার করেছে ২৯টি বিদ্যালয়।

মেসার্স নান্নু ব্রাদার্স, ওমর ব্রাদার্স, ঢাকা ফার্নিচার মার্টের মালিকেরা বলছেন, তাঁদের দোকানের মালামাল কেনার নামে যে ভাউচার দেখানো হয়েছে, তা জাল। তাঁদের দোকানে এমন সব রসিদ ব্যবহৃত হয় না।

সদরে বরাদ্দ পাওয়া ৮৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৫টি বিদ্যালয়ে ইট গাঁথুনি ও প্লাস্টারের কাজ হয়েছে। সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি আবুল হোসেন একাই কাজ করেছেন ৪৭টি বিদ্যালয়ে। তিনি মজুরি নিয়েছেন ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭৭ টাকা। আর ওই প্রকল্পে ৬১টি বিদ্যালয় ভবন রং করা হয়েছে। সদর উপজেলার কালুক্ষেত্র গ্রামের মো. সোহেল নামের এক রংমিস্ত্রি একাই করেছেন ৪১টি বিদ্যালয়ের কাজ। এসব কাজ করে তিনি মজুরি পেয়েছেন ১২ লাখ ৬৩ হাজার ১৬২ টাকা।

তবে মো. সোহেলের দাবি, তিনি তসলিম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে শুধু মুজামন্ডলহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রঙের কাজ করেছেন। বাকি ৪০টি বিদ্যালয়ের কাজ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। সেসব ভাউচারে তাঁর যে সই ব্যবহার করা হয়েছে, তা ভুয়া।

ঢাকা ফার্নিচার মার্ট তৈরি আসবাবের শোরুম হলেও সেখান থেকে মেহগনি, কাঁঠাল কাঠ কেনা থেকে শুরু করে কাঠের দরজা, উঁচু-নিচু বেঞ্চ মেরামত ও ট্রাশ তৈরি, টিন সেট করাসহ নানা খরচ দেখিয়েছে ২০টি বিদ্যালয়। আর্ট গ্যালারির মোড়ের বুলু ওয়ার্কশপ ও কালীবাড়ি এলাকার বাবুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে বারান্দার গ্রিল-কেঁচি গেট তৈরি করা না হলেও ১০টি বিদ্যালয় এখান থেকে ভবনের বারান্দার গ্রিল-কেঁচি গেট তৈরি দেখিয়েছে।

এসব ভাউচারের অধিকাংশই জাল বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকেরা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। বাবুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক মো. বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মেমো যাঁরা জাল করেছেন, তাঁরা অনৈতিক কাজ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার কথা ভাবছি।’

জমা দেওয়া ভাউচারে হুবহু মিল

উত্তর কহরপাড়া ও বোচাপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ পেয়েছে। দুটি বিদ্যালয়ই পাঁচটি করে ভাউচারের মাধ্যমে সেই বরাদ্দ তুলে নিয়েছে। দুটি বিদ্যালয়ের ভাউচারেই দোকানের নাম, পণ্যের পরিমাণ ও টাকার পরিমাণে হুবহু মিল রয়েছে। এ ছাড়া হাজিপাড়া ও পঞ্চায়েতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভাউচারের মধ্যেও কেনাকাটার তারিখ থেকে শুরু করে টাকার পরিমাণে হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

নিয়ম রক্ষায় খরচের ভাউচার জমা

বরাদ্দ পাওয়ার পর অল্প সময়ে বিল জমা দিতে বলা হয়। এ সময়ে হাতের কাছে যেসব দোকানের ক্যাশ মেমো পেয়েছেন, তাতেই বিল করে জমা দিয়েছেন। এ ওয়ান সুপারশপে পাথর বা বালু কিনতে পাওয়া যায় কি না, সেটা মাথায় আসেনি।
রবীন্দ্র নাথ রায়, প্রধান শিক্ষক, আরাজী দক্ষিণ বঠিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

মুজামন্ডলহাট ও রুহিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতে দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ পায়। বরাদ্দ পাওয়া ভাউচারের সঙ্গে খরচ যাচাই করতে গেলে দুই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজলুম পারভেজ ও শহীদুর রহমান এই প্রতিবেদকের হাতে কয়েকটি ভাউচার ধরিয়ে দিয়ে বলেন, তাঁরা কেবল নিয়ম রক্ষায় শিক্ষা কার্যালয়ে সেই সব ভাউচার জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে অন্য দোকান থেকে মালামাল কিনে কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। এটা প্রায় সব বিদ্যালয়েই ঘটছে।

শিক্ষক মজলুম পারভেজ বলেন, সরকারি নিয়ম রক্ষায় কাজ করার আগেই প্রাক্কলনের বিপরীতে যেনতেনভাবে দোকানের ভাউচার তৈরি করে শিক্ষা কার্যালয়ে জমা দিতে হয়েছে। কাজের আগে ভাউচার তৈরি করতে গেলে কিছু কিছু অসংগতি থাকতেই পারে।

আরাজী দক্ষিণ বঠিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ রায় বলেন, বরাদ্দ পাওয়ার পর অল্প সময়ে বিল জমা দিতে বলা হয়। এ সময়ে হাতের কাছে যেসব দোকানের ক্যাশ মেমো পেয়েছেন, তাতেই বিল করে জমা দিয়েছেন। এ ওয়ান সুপারশপে পাথর বা বালু কিনতে পাওয়া যায় কি না, সেটা মাথায় আসেনি।

খরচ দেখানো হলেও কাজ হয়নি

২০১৩ সালের জাতীয়করণ হওয়া বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যালয় মেরামত করতে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পায়। কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বিদ্যালয়টি ভাউচার জমা করে বরাদ্দ তুলেও নিয়েছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের বারান্দার গ্রিল, কেঁচি গেট, বেঞ্চ মেরামতের কোনোটাই হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম দাবি করেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির জটিলতার কারণে তিনি কোনো কাজ করতে পারেননি।
কচুবাড়ি গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন রং করার কথা বলা হলেও ভবনের এক প্রাচীরে ২০১৬ সালে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অর্ধেক ছেঁড়া পোস্টার দেখা গেছে। ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বুধারু চন্দ্র বর্মণ অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক বরাদ্দের টাকা কোথায় খরচ করেছেন, তা তিনি জানেন না। খরচের ভাউচারে তাঁর যে সই দেওয়া হয়েছে, তা জাল।

যা বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা

কাজের আগে খরচের ভাউচার জমা দিতে গিয়ে অনিয়মের সুযোগ থাকলেও নিয়মিত তদারকির কারণে সেটা ঘটে না। তবে কোন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভাউচার জমা করে টাকা ছাড় হলো এটা না দেখে কাজটি বাস্তবায়ন হয়েছে কি না, সেটা যাচাই করুন।
রুনা লায়লা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের লোকজনই প্রাক্কলনের বিপরীতে যে ভাউচার প্রস্তুত করে দিয়েছেন, তা তাঁরা শিক্ষা কার্যালয়ে জামা দিয়েছেন। বিনিময়ে প্রতিটি বিদ্যালয়কে ৫০০ থেকে ১ হাজার করে টাকা দিতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন বলেন, বরাদ্দের বিপরীতে ভাউচার তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। প্রধান শিক্ষকেরা বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ের সঠিক নিয়ম না জানায় অনেক সময় তাঁর সঠিকভাবে ভাউচার তৈরি করতে সহায়তা করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, ‘কাজের আগে খরচের ভাউচার জমা দিতে গিয়ে অনিয়মের সুযোগ থাকলেও নিয়মিত তদারকির কারণে সেটা ঘটে না। তবে কোন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভাউচার জমা করে টাকা ছাড় হলো এটা না দেখে কাজটি বাস্তবায়ন হয়েছে কি না, সেটা যাচাই করুন।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতের কাজ নিয়ম মেনেই হতে হবে। যেখানে অনিয়ম হচ্ছে, খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে বলেন, ‘প্রক্রিয়াটিই আমার কাছে অস্বচ্ছ বলে মনে হয়। ভাউচার সংগ্রহ করতে গিয়ে শিক্ষকেরা যেমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে হেয় হন, তেমনি বরাদ্দের টাকা তছরুপেরও আশঙ্কা থাকে।’