বরিশাল বিভাগে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগেও হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিন বিভাগটির ছয় জেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে। ফলে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোর করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ৪২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় সর্বোচ্চ ১৮ জন, পিরোজপুরে ১২, পটুয়াখালীতে ২, বরগুনায় ৩, ভোলায় ৪ ও ঝালকাঠিতে ৩ জন রয়েছেন। বিভাগে গড় সংক্রমণ ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ হলেও সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি পিরোজপুরে ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগের দিন গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এর আগের দিন তা ছিল ২০ জন, ১৫ জানুয়ারি তা ছিল মাত্র ৮ জন।

গত নভেম্বরে বিভাগে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর হাসপাতালগুলোর করোনা ওয়ার্ডের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারির প্রথম থেকে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন আবার তা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আজ সকাল পর্যন্ত ১২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৩০০ শয্যা রয়েছে। এর বেশি রোগীকে এখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।

অন্যদিকে গত বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়েছিল। হাসপাতালটিতে ১০০ শয্যা ছিল। কিন্তু এই হাসপাতালের পুরোনো ভবনটি ভেঙে ফেলায় এখন আর এই হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড খোলা সম্ভব নয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিদিন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ-তিন গুণ হারে বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে না মানলে সংক্রমণ আগের মতোই গতি পেতে পারে। এ জন্য এখন আমাদের জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকে নজর দিতে হবে।’

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এ সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধির ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের পূর্ব–সতর্কতা ছিল। আমরা বিভাগের সব হাসপাতালকে করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখেই কার্যক্রম এগোচ্ছে। সদর হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড করা এখন সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে স্থান সংকুলান না হলে পরবর্তী সময়ে বিকল্প চিন্তা করা হবে।’

মহামারি শুরুর পর থেকে বরিশাল বিভাগে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৫৫৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৪ হাজার ৬৫৬ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৬৭৯ জনের।