বরিশালে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে নয়জনের মৃত্যু

বরিশালে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে নয়জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উপসর্গ নিয়ে আটজন মারা যান বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। বাকি একজন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয় বরিশালের মুলাদী উপজেলায়।

এ নিয়ে এই হাসপাতালে করোনার উপসর্গ ও করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৬০৩। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে এই হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭৫ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৪২৮ জন। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে ৩৫ জনের করোনা পজিটিভ ফল আসে। আর ১৪৯ জনের ফল নেগেটিভ আসে। এতে পজিটিভ রোগী শনাক্তের হার দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ।

সূত্র জানায়, এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের ১২টি শয্যার মধ্যে ১১টি শয্যায় জরুরি রোগী চিকিৎসাধীন। আর করোনা ওয়ার্ডে পজিটিভ রোগী চিকিৎসাধীন ৪১ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ৫৬ জন।

এদিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বরিশালে গত কয়েক দিন করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এ বিভাগে করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। ১৩ থেকে ১৯ মার্চ—এই সাত দিনে বিভাগের ছয় জেলায় সংক্রমিত হন ৭৭ জন। কিন্তু ২০ থেকে ২৬ মার্চ পরের সাত দিনে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২২৮, অর্থাৎ প্রায় তিন গুণ। ১৬ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল—এই ১৯ দিনে বিভাগে আক্রান্ত হন ১ হাজার ৯৯১ জন। আর এপ্রিলের ১৫ দিনে সংক্রমিত হন ১ হাজার ৭৭৯ জন। সংক্রমণের এই গতি ২৫ এগ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এই সময়ে সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের ওপরে থাকলে এরপর তা নিম্নমুখী হতে শুরু করে।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে শনাক্ত হন ৪৮ জন রোগী। আর মারা যান একজন। এ নিয়ে বিভাগে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ হাজার ৫২৩। আর করোনা পজিটিভ হয়ে মারা যান ২৬২ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভাগে সংক্রমণের হার ছিল ১৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর মৃত্যুহার ছিল ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। তবে বৃহস্পতিবার জাতীয় হার ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। প্রায় দেড় মাস পর করোনায় রোগী শনাক্তের হার দেশে ১০-এর নিচে নামে ওই দিন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, সংক্রমণের গতি কয়েক দিন ধরেই নিম্নমুখী। এর পেছনে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।