বরিশালে মাদক মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে পরে আসামিকে প্রবেশন দিলেন আদালত

প্রতীকী ছবি

বরিশালে মাদক মামলায় এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে প্রবেশন প্রদান করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত তানজিল ইসলামকে (১৯) সাতটি শর্তে জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজের জিম্মায় এ প্রবেশন প্রদান করেন বিচারক।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর বরিশাল নগরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাকলার মোড় এলাকা থেকে তিনটি ইয়াবা বড়িসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ওই এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে তানজিল। পরে পুলিশ এ মামলায় তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ বিচারক এ মামলায় তানজিল ইসলামকে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। পরে আসামি তানজিল এ ঘটনায় তাঁর দোষ স্বীকার করে অনুতপ্ত হওয়ায় বিচারক স্বপ্রণোদিত হয়ে দি প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অ্যাক্ট-১৯৬০-এর ৫ ধারায় ৭টি শর্তে তানজিলের প্রবেশন মঞ্জুর করেন। পরে পাঁচ হাজার টাকা বন্ড নিয়ে জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজের জিম্মায় তাঁকে প্রবেশনের আদেশ দেন।

এ সময় আসামি তানজিল বাড়িতে অবস্থান করে নিজেকে সংশোধন করার অঙ্গীকার করেন।
আদালতের এ রায় অত্যন্ত ইতিবাচক। এর আগে বরিশাল জেলায় এ ধরনের লঘু অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ জন শিশু-কিশোর ও নারী প্রবেশন ভোগ করছেন। তাঁরা সবাই সংশোধন হওয়ার সুযোগ পেয়ে নিজেরা দক্ষতা অর্জন করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
সাজ্জাদ পারভেজ, প্রবেশন কর্মকর্তা

এ সময় আসামি তানজিল বাড়িতে অবস্থান করে নিজেকে সংশোধন করার অঙ্গীকার করেন। তাঁকে যে সাত শর্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো আসামি কখনো মাদক সেবন, বহন ও বিক্রিতে যুক্ত হতে পারবেন না; তাঁকে এই সময়ে মাদক ও ধূমপানবিরোধী প্রচার, আন্দোলন ও সচেতনতায় কাজ করতে হবে; প্রবেশনকালীন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমে নিজেকে সমৃদ্ধ এবং অপরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে; মা–বাবার যথাযথ ভরণপোষণ, প্রতিবেশী, নিকটাত্মীয়দের খোঁজ নিতে হবে; বাড়ির আঙিনা অথবা উন্মুক্ত স্থানে ১০টি ফলদ, ১০টি বনজ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে; প্রবেশনকালীন প্রবেশন কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে; প্রতি মাসে একবার প্রবেশন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করা ও তাঁর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না এবং প্রতি মাসে দুবার সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও এসব কাজের অগ্রগতি জানাতে হবে।

প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, আদালতের এ রায় অত্যন্ত ইতিবাচক। এর আগে বরিশাল জেলায় এ ধরনের লঘু অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ জন শিশু-কিশোর ও নারী প্রবেশন ভোগ করছেন। তাঁরা সবাই সংশোধন হওয়ার সুযোগ পেয়ে নিজেরা দক্ষতা অর্জন করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।