বরিশালে রিমান্ডে নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে পুলিশের কমিটি

নারী নির্যাতন
প্রতীকী ছবি

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক নারীকে (৩০) রিমান্ডে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ের পুলিশ সুপার কাজী সোয়েব আহম্মেদকে প্রধান ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেনকে সদস্য করা হয়েছে।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান। আজ রোববার বিকেলে তিনি বলেন, কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

দুই দিনের রিমান্ড শেষে ওই নারীকে গত শুক্রবার বরিশালের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তিনি অভিযোগ করেন, দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আদালতের বিচারক মাহফুজুর রহমান আসামির অভিযোগ আমলে নেন। তিনি নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নির্যাতনের চিহ্ন ও নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষার পর শনিবার বিকেলে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। আদালতের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চিকিৎসা প্রতিবেদনে ওই নারী আসামির শরীরের বিভিন্ন স্থানে শক্ত কিছু দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন।

তবে হাসপাতাল পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম প্রতিবেদনের বিষয়ে বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা সিলগালা করা খামে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর ৩ জুলাই তা আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে কী উল্লেখ করা হয়েছে, তা জানা নেই।
পুলিশ জানায়, ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় বাসুদেব চক্রবর্তী (৪০) নামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর ভাই বরুণ চক্রবর্তী ওই দিনই থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এক নারীকে আসামি করা হয়। ২৮ জুন উজিরপুর থানার পুলিশ ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে।

আদালত সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ৩০ জুন বরিশালের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ওই নারী আসামিকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান বিচারক। এ সময় তিনি শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রিমান্ডে নিয়ে ওই নারীকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। এসব অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা।

আরও পড়ুন