বরিশালে রোগীর মৃত্যুর পর হাসপাতালে চিকিৎসক-স্বজনদের সংঘর্ষ, দেড় ঘণ্টা অচলাবস্থা

শনিবার বিকেলে এক দফা সংঘর্ষের পর রাতে দুপক্ষের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়
ছবি: প্রথম আলো

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক কলেজছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নিহত রোগীর স্বজন-সহপাঠীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে এক দফা সংঘর্ষের পর রাতে দুপক্ষের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন অন্যান্য রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। পরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

হাসপাতালের চিকিৎসক, নিহত রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে নগরের মহাবাজ সেতু এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আহত হয় কলেজছাত্র রিয়াদুল ইসলাম (১৭) ও তার দুই সহপাঠী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তাদের হাসপাতালের চতুর্থ তলার সার্জারি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পরপরই ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা রিয়াদুলকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অপর দুজনের চিকিৎসা শুরু করেন। রিয়াদুলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সহপাঠী ও স্বজনেরা সার্জারি ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কক্ষে হামলা চালান। তাঁরা ওই কক্ষের জানালা ও আসবাব ভাঙচুর করেন। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আনসাররা শিক্ষার্থী ও স্বজনদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ করে রিয়াদুলের পরিবার।

সংঘর্ষের পর ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি শুরু করেন। এ সময় তাঁরা জরুরি বিভাগের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে রোগী ও স্বজনদের মারাত্মক দুর্ভোগে পড়তে হয়। অন্যদিকে, নিহত কলেজছাত্রের স্বজন ও সহপাঠীরাও হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের হাসপাতালের ফটক ও সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। দুপক্ষই সরে গেলে রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, মেয়র আসার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কাজে ফিরেছেন। সবকিছু এখন স্বাভাবিক আছে।