বসন্তের কোকিলদের নেতা বানিয়ে লাভ নেই: ওবায়দুল কাদের

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তৃতা করেন ওবায়দুল কাদের
ছবি: আলীমুজ্জামান

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বসন্তের কোকিলদের নেতা বানিয়ে লাভ নেই, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। দলের সংকটে সুবিধাবাদীদের হাজার পাওয়ারের বাল্ব জ্বালিয়ে পাওয়া যাবে না। অতীতে যাঁরা দলের প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের  কমিটিতে স্থান দেওয়া যাবে না। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফরিদপুরে বিগত কয়েক বছরে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সুখকর ছিল না। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, রক্তপাত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কারা ধ্বংস করেছিল, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের কোনো পদ দেওয়া যাবে না। যারা নৌকার বিরোধিতা করে নির্বাচন করেছে, তাদের কোনো পদে রাখা যাবে না। আওয়ামী লীগ চলবে প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, হাইব্রিডদের নেতৃত্বে নয়।

ফরিদপুরকে ‘পদ্মা পাড়ের মায়াবী শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ জেলা বঙ্গবন্ধুর জেলা, এ জেলা শেখ হাসিনার জেলা। এ জেলার উন্নয়নে শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিক। তিনি আরও বলেন, আগামী জুনের শেষ দিকে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করা হবে। এরপর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে।

শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন। আর বিএনপির মির্জা ফখরুল শুধু অন্ধকার দেখেন। তাঁরা চোখে ঠুলি পড়ে আছেন। পঁচাত্তরের পর শেখ হাসিনার মতো সৎ, যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেত্রী জাতি পায়নি। পাশাপাশি মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতাদের আন্দোলন ও নির্বাচনী ব্যর্থতার জন্য বিএনপির ‘টপ টু বটম’ সব নেতাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন তিনি।

দলের জাতীয় সম্মেলনের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জেলা ও উপজেলার সম্মেলন শেষ করা হবে। সম্মেলনের পর নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হবে। এ জন্য জেলা পর্যায়ের দলগুলোকে এখন সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, গণতন্ত্র বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।

শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়োজিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন।

এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জেলা ও নয়টি উপজেলার উদ্যোগে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ৫০টি পায়রা এবং ১০০ বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ, ঢাকা বিভাগের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আবদুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে ২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন