বাঁধ ভেঙে দুই শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার মিটার বাঁধ। শুক্রবার সকালে গোবিন্দনগর গ্রামে
সংগৃহীত

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদের দুটি অংশের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়। এতে নালিতাবাড়ী পৌর শহরের নিচপাড়া ও গোবিন্দনগর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব পরিবারের অনেকে নিজ বাড়ি ছেড়ে বৃহস্পতিবার রাতে দূরে স্বজনদের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেছেন। অনেকে আবার বাড়ির জিনিসপত্র নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন উঁচু স্থানে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দনগর গ্রামের ভোগাই নদের ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। এ ছাড়া আরও এক হাজার কিলোমিটার বাঁধে আংশিক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। উজানের ঢলে গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত ৩০০ মিটার কাঁচা সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। গোবিন্দনগর গ্রামের প্রায় ৮০ একর আমনের খেত পানিতে ডুবে গেছে। পৌর শহরের নিচপাড়া এলাকার ভোগাই নদের ২০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত হয়েছে নিচপাড়া এলাকা। মরিচপুরান এলাকায় ভোগাই নদের আগের ভাঙন অংশ দিয়ে পানি ঢুকে খলাভাঙা সড়কটি ডুবে গেছে। এতে চলাচলে স্থানীয় বাসিন্দা পড়েছেন দুর্ভোগে।

গোবিন্দনগর গ্রামের গৃহিণী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পানির লাইগা আমরা রাইতে অন্য বাড়িতে ছিলাম। বাড়ির জিনিসপত্র সরাইয়া নিছি, কিন্তু হাঁস-মুরগি সব ভাসাই নিয়ে গেছে গা। যদি বান্দের ব্যবস্থা না করে, তাইলে আমরা বাড়িঘরে ফিরবার পামু না।’

এদিকে বাঁধভাঙন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

ইউএনও মাহফুজুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান বলেন, গোবিন্দনগর এলাকায় ভোগাই নদের ভাঙন ঠেকাতে গত বছর বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের পাহাড়ি ঢলে সেই বাঁধসহ প্রায় দেড় হাজার মিটার বাঁধের ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধ রক্ষায় পাউবোর কর্মকর্তাদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেছেন।