বাংলাবাজার ফেরিঘাটে সকালে ভিড়, দুপুরে ফাঁকা

কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় শুক্রবার বেলা একটার পর অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাট।
ছবি: প্রথম আলো

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে শুক্রবার সকাল নয়টা পর্যন্ত প্রচণ্ড ভিড় থাকলেও বেলা একটার পর অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, ঈদ শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে। শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আবারও কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষিত হওয়ায় এই নৌপথে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। রাতে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। শুক্রবার সকালে ভিড় বাড়তে থাকে যাত্রী ও যানবাহনের। পরে প্রশাসনের কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ায় সকাল নয়টার পর ঘাটে নতুন করে আর কোনো যাত্রী প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে কমতে থাকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ।

বেলা একটায় বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সালাউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধে আমরা কোনো যাত্রীকে ফেরিতে উঠতে দিচ্ছি না। সকাল নয়টার আগেই ঘাটে যাত্রী ও আটকে থাকা যানবাহন পারাপার হয়ে গেছে। এখন পণ্যবাহী ট্রাক, লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স আমরা ফেরিতে পারাপার করছি। কোনো যানবাহন এখন অপেক্ষমাণ নেই। ঘাট অনেকটাই ফাঁকা।’

সালাউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচলে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হলেও আমরা ১৬টি ফেরি চালু রেখেছি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি বা যাত্রী পারাপার করা হবে না।

সকালে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের বেশ চাপ ছিল। বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকা, মাদারীপুর, ২৩ জুলাই সকাল ৯টা।
ছবি: প্রথম আলো

সরেজমিনে শুক্রবার বেলা একটার দিকে বাংলাবাজার ঘাটে দেখা যায়, ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নেই। কিছু পণ্যবাহী ট্রাক টার্মিনালে আটকা। লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স বা সরকারি জরুরি প্রয়োজনে আসা গাড়ি ঘাটে আসামাত্রই ফেরিতে উঠতে পারছে। ঘাট এলাকায় ট্রাফিক, নৌ ও থানা পুলিশের কড়াকড়ি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো যাত্রীকে ঘাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সংযোগ সড়ক ও প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। ফলে সাধারণ কোনো যাত্রী বা গণপরিবহন ঘাটে প্রবেশ করতে পারছে না।

ঢাকাগামী যাত্রী সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করি। ঈদে বাড়িতে আসি। কাল থেকে অফিস খোলা। তাই জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় যাচ্ছি। ঘাটে আসার পর প্রশাসনের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে।’

মনোয়ার হোসেন নামের আরেক যাত্রী যাত্রী বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সকালে ঘাটে আসি। প্রথমে আমাকে ফেরিতে উঠতে দেয়নি। অনেক অনুরোধ করার পর তারা আমাকে ফেরিতে ওঠায়।’

বাংলাবাজার ঘাটের দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার ভোরে যাত্রী ও যানবাহনের খুব চাপ ছিল। সকালে ছোট গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকলেও ফেরি ১৬টি চলায় রাতে আটকা পড়া গাড়িগুলো সকালে পার করে দেওয়া হয়। কিন্তু সকাল থেকে কোনো সাধারণ গাড়ি আমরা ঘাটে প্রবেশ করতে দিইনি। সকাল নয়টার পর থেকেই ঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে। দুপুরের পরে ঘাট পুরোপুরি ফাঁকা।’