বাংলাবাজার-শিমুলিয়ায় নানা ‘অজুহাতে’ ফেরিতে যাত্রীদের পারাপার

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণ যাত্রীদের পারাপারে বিধিনিষেধ থাকলেও নানা অজুহাতে ফেরি পার হচ্ছেন যাত্রীরা। বুধবার সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে।
ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ যাত্রীদের পারাপারে বিধিনিষেধ থাকার পরও নানা ‘অজুহাতে’ ফেরিতে করে পারাপার চলছে। আজ বুধবার সকাল থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তবে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের চাপ গতকালের তুলনায় আজ কিছুটা কমেছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) বাংলাবাজার ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামিল আহমেদ বলেন, ‘ফেরিতে যাত্রীরা উঠছেন, নামছেন। কোনো ফেরিতে যাত্রী বেশি, আবার কোনোটায় কম। তবে গতকালের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ কিছুটা কমেছে। অতিরিক্ত চাপ নেই। যাঁরা ফেরিতে যাচ্ছেন, তাঁরা নানা অজুহাত দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে বের হয়ে ঘাটে আসতে পারছেন।’ তিনি জানান, পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহন দ্রুত সময়ে পারাপারের জন্য উভয় ঘাট থেকে ১৫টি ফেরি চালু রাখা হয়েছে। বাংলাবাজার ঘাটে আটকা পড়া গাড়িগুলো ফেরিতে পারাপার করা হচ্ছে। ঘাটে কোনো যানবাহনের চাপ নেই।

বিআইডব্লিউটিসি ঘাট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলারসহ অন্যান্য যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল। লঞ্চসহ যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে ফেরিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাহিন্দ্র, মোটরসাইকেল, নছিমন-করিমন ও থ্রি হুইলারে চড়ে ঘাটে ভিড় করছেন। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় ফিরছেন। ঘাটে আসা বেশির ভাগ যাত্রীই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছেন না। অনেক যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই।

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোট দিতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলাম। এখন ভোট শেষ, তাই ঢাকায় ফিরা যাইতাছি। যখন ভোট দিতে আসছি, তখন তো আর ভাবি নাই লকডাউন দিয়া দিবে। লকডাউনের মধ্যে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে ভাড়া বেশি বেশি দিয়ে ঢাকায় যাইতে হইতাছে। এই বেশি ভাড়ার টাকা তো আর সরকার দিয়া দিবে না!’

গোপালগঞ্জ থেকে আসা যাত্রী শামীম হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় একটি কারখানায় কাম করি। এক সপ্তাহের ছুটি লইয়া বাড়ি আসছিলাম অসুস্থ মাকে দেখতে। আইসা আটকা পড়ছি। আজকের মধ্যে ঢাকা না ঢুকতে পারলে চাকরি থাকবে না। তাই অনেকটা পথ হাঁইটা ঘাটে আইছি। এখন ফেরিতে উইঠা ঢাকায় যামু।’

বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) জামালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘাটে প্রচুর মানুষ আছে। বিশ্রাম নেই। লকডাউন হলেও মানুষের চাপ আর কমে না। সাধারণ যাত্রীরা হেঁটেও ঘাটে আসছেন। অনেকেই থ্রি হুইলারে করে আসছেন। ঘাটে আসা সাধারণ যাত্রীদের অজুহাতের শেষ নেই। লকডাউনে ঘাটে আসা ঢাকামুখী যাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ চাকরিজীবী।’