‘বাইশরশি জমিদারবাড়ি,সবাই মিলে রক্ষা করি’

  • ১২৭০ বঙ্গাব্দে বাইশরশি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩০ একর জমির ওপর স্থাপিত।

  • ছোট-বড় কারুকার্যময় ১৪টি ভবন রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পাঁচটি শানবাঁধানো পুকুর ও বিশাল বাগানবাড়ি।

সদরপুর উপজেলায় বাইশরশি জমিদারবাড়ি সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবিতে গতকাল সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের সদরপুরে বাইশরশি জমিদারবাড়ি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সদরপুর ও ফরিদপুর শহরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে একই দাবিতে সদরপুর ইউএনওর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

৩৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে ‘বাইশরশি জমিদারবাড়ি রক্ষা ও সংরক্ষণ আন্দোলন’–এর অংশ হিসেবে গতকাল এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে অসংখ্য তরুণ অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ‘বাইশরশি জমিদারবাড়ি, সবাই মিলে রক্ষা করি’ স্লোগান দেন।

সদরপুরে পুখরিয়া-সদরপুর সড়কের বাইশরশি জমিদারবাড়ির সামনের সড়কে সকাল ১০টায় ‘ফরিদপুরের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যপ্রেমী সংগঠন’–এর ব্যানারে মানববন্ধন শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাইশরশি জমিদারবাড়ি শুধু সদরপুরের নয়, সারা দেশের একটি ঐতিহ্য। এটি রক্ষা করতে যা যা প্রয়োজন, তা আমরা করব।’ জমিদারবাড়ি রক্ষাসহ পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন ভাঙ্গা কে এম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোশায়েদ হোসেন ঢালী, বাইশরশি উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এনামুল হক ফকির, কাশিয়ানীর ইয়ার আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, ভাঙ্গা সিপিবির সদস্য প্রভাষ মালো, বাইশরশি জমিদারবাড়ি সংরক্ষণ আন্দোলনের মুখপত্র ও সেপটোস ফোরের সভাপতি হাওলাদার শামীম আহমেদ।

শামীম আহমেদ বলেন, এখানকার নিদর্শন নিয়ে গবেষণা করছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। অথচ ২০০ বছরের পুরোনো এই বাড়ি রক্ষা না করে বিক্রি করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।

মানববন্ধন শেষে আন্দোলনকারীরা সদরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূরবী গোলদারের হাতে দাবি–সংবলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

এরপর আন্দোলনকারীরা বেলা দেড়টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে কিছু সময়ের জন্য মানববন্ধন করেন।

এ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে গত সোমবার রাতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চারটি ভ্রমণ ও পরিবেশবাদী সংগঠনের ১৬ সদস্য বাইশরশি জমিদারবাড়িতে আসেন।

ফরিদপুর শহর থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে সদরপুরের বাইশরশিতে জমিদারবাড়িটির অবস্থান। ১২৭০ বঙ্গাব্দে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩০ একর জমির ওপর স্থাপিত এ জমিদারবাড়িতে ছোট-বড় কারুকার্যময় ১৪টি ভবন রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পাঁচটি শানবাঁধানো পুকুর ও বিশাল বাগানবাড়ি।

ইউএনও পূরবী গোলদার বলেন, ওই সম্পত্তি ‘ক’ তালিকাভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। এটি এ অঞ্চলের জমিদারদের সর্বশেষ নিদর্শন। প্রতিদিন এ বাড়ি দেখতে পর্যটক আসেন।