বাউফলে আ.লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

পটুয়াখালী জেলার মানচিত্র

পটুয়াখালীর বাউফলে ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব নওমালা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নওমালা ইউপি নির্বাচনের ভোট দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ওই ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামাল হোসেন বিশ্বাস। বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে লড়ছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কামাল হোসেনের সমর্থকেরা শাহজাদা হাওলাদারের কর্মী ১ নম্বর ওয়ার্ডের রেজাউল চৌকিদারের (২৮) ঘর কুপিয়ে ও ভাঙচুর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। গতকাল রাতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নৌকার সমর্থক সোহরাব সিকদার ও নুরু সিকদারের দোকান ভাঙচুর করেন ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকেরা। একই রাতে একই ওয়ার্ডের ঘোড়া প্রতীকের সমর্থক আফজাল মজুমদারের ঘর ভাঙচুর করেন নৌকার সমর্থকেরা। এ ঘটনার জেরে আজ সকালে নৌকা প্রতীকের কর্মী মো. নজিরের (৪৮) সঙ্গে ঘোড়া প্রতীকের কর্মী মো. শাহিনের (২০) কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নজিরকে আটকে মারধর করেন শাহিন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নৌকা প্রতীকের ২০-২৫ জন কর্মী-সমর্থক ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহিনকে কুপিয়ে জখম করেন। খবর পেয়ে ঘোড়া প্রতীকের ১৫-২০ জন কর্মী-সমর্থক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে দুই পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হন।

নওমালা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামাল হোসেন বিশ্বাস। বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

পুলিশ গিয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. নজরুল ইসলাম (৪৫), মো. সাইফুল (২৫), মো. রিয়াজ মৃধা (২৫), মো. মনির হোসেন (৪০), মো. কাওসার রাঢ়ী (২০), মো. নিজাম (৩৮) মো. শাহিন (২০), মো. ইমরান (২২), মো. হেলাল হাওলাদার (২৫), মো. রায়হান (১৮) ও মো. রাসেলকে (২২) উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় শাহজাদা হাওলাদারের এক কর্মী তিন-চারটি গুলি ছোড়েন। এ সময় পুলিশ তিনটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে নওমালা কলেজ সড়কের সাহা গাজীর বাড়ির সামনে পুলিশের উপস্থিতিতে ওই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওই সময় কামাল হোসেন পক্ষের ছোড়া গুলিতে শাহাজাদা হাওলাদারের কর্মী মো. সজীব (২০) গুলিবিদ্ধ হন। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর শরীর থেকে গুলি বের করা হয়। গোলাগুলির দুটি ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।