বাগমারায় এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ

রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিনের আমবাগান ভোটকেন্দ্রের আজ শনিবারের চিত্রপ্রথম আলো

উদ্বেগ, উত্তেজনা ও আতঙ্কের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে পৌরসভার নয়টি কেন্দ্রে এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী।

আগের রাতে পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির দুই সদস্য জহুরুল ইসলাম ও আহসান আলীকে মারপিট এবং বিএনপির নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র আবদুল মালেক মণ্ডল, বিএনপির আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক, স্বতন্ত্র এস এম মামুনুর রশিদ ও কামাল হোসেন। মোট ১৪ হাজার ৪০৫ জন ভোটার রয়েছেন এই পৌরসভায়।

আজ সকালে পৌরসভার নয়টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। এরপর শুরু হয় ভোট গ্রহণ। সকালে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত ঠেলে ভোটাররা কেন্দ্রে আসেন ভোট দিতে। ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তবে ভোটের আগের দিন শুক্রবার রাতে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ধানের শীষের কর্মী ও ভবানীগঞ্জ পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আহসান আলীর (৪৫) ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। পরে যুবদলের আরেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহরুল ইসলামের বাড়িঘরেও হামলা চালিয়ে দরজা ভেঙে ফেলা ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।

এ ছাড়া এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া রাতে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দরগামাড়িয়া এলাকায় বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর লোকজন ভয়ভীতি দেখিয়ে বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক। এর ফলে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন ভোটাররা। রাতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা পৌরসভা এলাকায়।

বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে তাঁদের পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অনেককে মারপিট করা হয়েছে। ভোটারদেরও কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পথে পথে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ করেন।

সকাল সাড়ে নয়টায় ভবানীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। নৌকার সমর্থক ভোটারদের বুকে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়। এই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মহসীন মৃধার কাছে অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রকম তথ্য তাঁর কাছে নেই। পোলিং এজেন্টদের বিষয় দেখা হচ্ছে। কোনো ভোটার না আসতে পারলে তাঁকে নিয়ে এলে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।

পৌরসভার ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল মালেক মণ্ডল সাদোপাড়া মাদ্রাসাকেন্দ্রে ভোটারদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। তিনি জানান, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।