বাঘায় আমবাগান কেটে পুকুর খনন, জরিমানা

রাজশাহীর বাঘায় আমবাগান কেটে পুকুর খননের প্রস্তুতির সময় ইউএনও অভিযান চালিয়ে পুকুর খনন বন্ধ করেন। জরিমানা করেন বাগান মালিককে
ছবি: প্রথম আলো

ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন না করেই রাজশাহীর বাঘায় আমবাগান কেটে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া সুলতানা একটি বাগানে অভিযান চালান। ঘটনার সত্যতা পেয়ে আমবাগানের মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে তাঁর খননযন্ত্রের (ভেকু মেশিন) ব্যাটারি। ওই বাগানমালিকের নাম লিটন আলী। তাঁর বাড়ি উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিটন আলী তাঁর নিজের আমবাগান কেটে সেই জমিতে পুকুর খনন করছিলেন। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে বলা হয়, বর্ষা মৌসুমে লিটন আলীর জমি দিয়ে মাঠের পানি বের হয়। এই জমিতে পুকুর খনন করা হলে বর্ষা মৌসুমে পুকুরের পাড়ে বাধাগ্রস্ত হয়ে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ২০টি বাড়িতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া ৪০ বিঘা জমিতে লাগানো আমগাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ মারা যাবে।

অভিযোগকারী আরও বলেন, শুধু নিশ্চিন্তপুর গ্রামে নয়, বাঘা পৌরসভার উত্তর মিলিকবাঘা, বলিহার, চাকিপাড়া, বাজুবাঘা ইউনিয়নের বার খাদিয়া, মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসীপুর, পাকুড়িয়া, আড়ানী ও বাউসা ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে এভাবেই ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন না করেই পুকুর খনন চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি উপজেলার বলিহার গ্রামের সকাল সরকার ও স্বপন সরকার মিলে তাঁদের সাড়ে ৯ বিঘা জমির আমবাগান কেটে পুকুর খনন করেছেন। তাঁদের দাবি, আমবাগানে ফলন ভালো হচ্ছে না। তাই বাগান কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। এ ছাড়া তেঁথুলিয়া গ্রামের জামাল সরকার প্রায় আড়াই বিঘা জমির ওপর ১০-১২ বছর আগে লাগানো আমবাগানের গাছ কেটে পরিষ্কার করেছেন। তিনিও পুকুর খনন করবেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন জায়গায় পুকুর খননের মাটি পরিবহনের সময় তা উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় পড়ছে। এতে পাকা রাস্তায় ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। এ বিষয়ে বাঘা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক বলেন, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পুকুর খনন। এই পুকুর খননের মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এই মাটি পাকা রাস্তায় পড়ে শুকিয়ে ধুলায় পরিণত হচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি এসে খননযন্ত্রের ব্যাটারি জব্দ করে নিয়ে গেছেন।

বৃহস্পতিবারের অভিযানের বিষয়ে ইউএনও পাপিয়া সুলতানা বলেন, বাগানের মালিক পুকুর খননের জন্য ভেকু নিয়ে গিয়েছিলেন। অভিযোগ পেয়েই সেখানে গিয়ে তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। ভেকুর ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে। ইউএনও আরও বলেন, পুকুর খনন করতে হলে নিয়ম অনুযায়ী ভূমির শ্রেণির পরিবর্তন করে নিতে হবে। এটা তাঁরা করেননি। এ রকম যেখানেই খবর পেয়েছেন, সেখানেই অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছেন।