বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ যাত্রীসেবা বাড়াতে আখাউড়ায় বাংলাদেশ–ভারতের যৌথ বৈঠক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে বাংলাদেশ ও ভারতের স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট সমন্বয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ দুপুরে আখাউড়া বন্দরের সম্মেলন কক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে বাংলাদেশ ও ভারতের স্থলবন্দর–সংশ্লিষ্ট সমন্বয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে বন্দরের চলমান বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ নিয়ে উভয় দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে জানানো হয়।

বৈঠকে আগরতলা স্থলবন্দরের ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের ব্যবস্থাপক দেবাশীষ নন্দীর নেতৃত্বে ভারতের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. কবীর খানের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বৈঠকে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার, আখাউড়া ইমিগ্রেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্করসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মো. কবীর খান বলেন, ‘আমরা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ চাই। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বন্দর আখাউড়া। আমরা চাই, রপ্তানি পণ্যগুলো সহজেই ভারতে প্রবেশ করুক। মাছসহ বিভিন্ন মাল ভারতে যায়। কিন্তু আগরতলায় ট্রান্সশিপমেন্ট শেড না থাকায় মালামাল নষ্ট হয়। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রান্সশিপমেন্ট শেড তৈরির জন্য তাঁদের কাছে অনুরোধ করেছি।’

কবীর খান আরও বলেন, ভিসার ক্ষেত্রে ভারতীয় যাত্রীদের যেমন কোনো নির্দিষ্ট পথ থাকে না, এ দেশের যাত্রীদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও যেন পথ নির্দিষ্ট করে না দেওয়া হয় সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের যাত্রীরা যেন সব পোর্ট, বিমান ও রেলপথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারে, সেই অনুরোধ করা হয়। এডিবির আওতায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে। আখাউড়ায় একটি আধুনিক স্থলবন্দর নির্মাণ করা হবে এবং দুই দেশের সীমান্তের জিরো পয়েন্টে একটি আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল বানানো হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যাত্রীরা যেন উন্মুক্তভাবে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই যেকোনো পথ দিয়ে ভারতে যেতে পারেন, সে বিষয়ে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

দেবাশীষ নন্দী বলেন, ‘আখাউড়া ও আগরতলা আন্তর্জাতিক সীমান্তে মালামাল ও যাত্রীরা যেন পারাপার সহজেই করতে পারেন, সেই সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে। ওই কমিটি রেগুলার (নিয়মিত) হওয়ার কথা। কিন্তু করোনার কারণে আমরা সেই কমিটি পিছিয়ে দিতে বাধ্য হই। আজ ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল, যাত্রী পারাপার ও মালামালের গাড়ি পাঠানো নিয়ে। যাত্রীদের কিছু সমস্যা হচ্ছে। সবকিছুর সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি। আর কোনো বাধাবিপত্তি থাকবে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে দেবাশীষ নন্দী বলেন, বাংলাদেশ কাস্টমসের প্রক্রিয়াগত কারণে ভারতে ছোট মাছ পাঠাতে বিলম্ব হয়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কাজটি দ্রুত করবে বলে জানায়। বাংলাদেশি একই পরিবারের একাধিক যাত্রীর ভিন্ন ভিন্ন পোর্ট দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাত্রীদের অসুবিধার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। দুই দেশের আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।