বাস নেই, অন্য যানবাহন চলছে তিন গুণ

বাস না থাকলেও সড়কে রয়েছে অন্য যানবাহনের চাপ। সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ধলাটেংগুরে
প্রথম আলো

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দূরপাল্লার বাস চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে নিজ নিজ কর্মস্থলে সবাইকে অবস্থান করার জন্য সরকার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ঈদ সামনে রেখে থেমে নেই মানুষের বাড়ি ফেরা। ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ব্যক্তিগত গাড়িতে গাদাগাদি করে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ যানবাহন চলাচল করছে এই সেতু হয়ে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ হাজার ৮৯৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ টাকা। স্বাভাবিক সময়ে ১২-১৩ হাজার যানবাহন চলাচল করে এই সেতু হয়ে। এদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে আজ সোমবার ভোরে সেতু এলাকায় প্রায় ৫ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুপুরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।

সোমবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়কে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় দূরপাল্লার বাস নেই। তবে চাপ রয়েছে ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ব্যক্তিগত গাড়ির। এসব যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ যাচ্ছে। অনেকে সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে চলাচল করছেন।

টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কে কথা হয় নাটোরের সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে নাগরপুর থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত এসেছেন। এখন নাটোর যাওয়ার জন্য যানবাহনের অপেক্ষায় রয়েছেন। একটি মাইক্রোবাস পেয়েছিলেন ভাড়া চেয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা। অথচ স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া লাগে ৩০০ টাকা।

কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, যানবাহনের জন্য কয়েক শ মানুষ অপেক্ষা করছে। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই গাজীপুর, সাভার এলাকা থেকে আসা শ্রমজীবী। এঁদের অনেকেই রিকশা, অটোরিকশা করে এলেঙ্গা পর্যন্ত এসেছেন।
শরিফ হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ী থেকে এ পর্যন্ত আসতে ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। এখন এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে মোটরসাইকেলে চাচ্ছে ৫০০ টাকা। বাধ্য হয়ে এই ভাড়াতেই যেতে হচ্ছে।

মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে মানুষ যাচ্ছে। তাদের নামিয়ে দিলে বা ট্রাকগুলোকে দাঁড় করালে একদিকে যানজট বেড়ে যায়। আবার যাত্রীরাও দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। তাই ট্রাকসহ অন্যান্য মালবাহী পরিবহনে যাত্রী বহন করলেও তাঁরা বাধা দিচ্ছেন না।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) ইয়াসির আরাফাত বলেন, যাত্রীবাহী দূরপাল্লার বাস না চললেও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চাপ রয়েছে। সকালে সেতু এলাকায় কিছুটা যানজট হলেও এখন স্বাভাবিক রয়েছে।